নানুরে পথসভায় সায়ন্তন বসু। নিজস্ব চিত্র।
নারী সুরক্ষা ও অপরাধের দমনের প্রশ্নে বিজেপি শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলা। খয়রাশোলের মহিলা সম্মেলনে উত্তরপ্রদেশের হাথরসের উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে বিঁধলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
বুধবার খয়রাশোলের পাঁচড়া গ্রাম ঢোকার মুখে একটি মাঠে তৃণমূলের মহিলা সম্মেলন ছিল। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনুব্রত বলেন, ‘‘কী অন্যায় করেছিলেন বছর আঠারোর ওই নির্যাতিতা? তাঁকে পুড়িয়ে মারা হল। প্রতিবাদ করে কী দোষ করেছিলেন তাঁর বাবা, যে তাঁকে গুলি করা মারা হবে! লজ্জা লাগে না মোদী! বড় বড় কথা বলছেন যোগী।’’ প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার জামিনে মুক্ত যৌন নির্যাতনে অভিযুক্তের গুলিতে হাথরসে খুন হন নির্যাতিতার বাবা। আর সে দিনই মালদহের গাজোলে এক দলীয় জনসভায় যোগী আদিত্যনাথ অভিযোগ করেন, মহিলাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ এ রাজ্যের সরকার।
যাঁর রাজ্যে এত ‘অপরাধ’ ও ‘অরাজকতা’, তাঁর এমন প্রশ্ন তোলার অধিকার আছে কি না, তা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল শাসক দল। দলের মহিলাদের সম্মলনে সেই প্রসঙ্গ তুলেই বিজেপি-কে আক্রমণ করলেন অনুব্রতও। তবে শুধু বিজেপিকে আক্রমণ নয়, লোকসভার ভোটের নিরিখে সাংগঠনিক ভাবে ‘দুর্বল’ খয়রাশোলে জিতলে এই তল্লাটকে সাজিয়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও এ দিন দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। লোকসভা ভোটের অঙ্কে দেখলে গোটা জেলায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা খয়রাশোল ব্লক। ২০১৯ সালে এখানে ১৫ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল শাসকদল। সেই খামতি মেটানোর চেষ্টা ক্রমাগত চালাচ্ছে তৃণমূল। এ দিন উপস্থিত মহিলা কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে অনুব্রত বলেন, ‘‘ভুল করবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দেবেন। আমি কথা দিচ্ছি, খয়রাশোলকে সাজিয়ে তুলব। খয়রাশোলের একটা রাস্তাও খারাপ থাকবে না। তখন প্রত্যেকে বলবেন, কী ছিল খয়রাশোল, আর কী হল।’’
যা শুনে বিজেপির কটাক্ষ, গত ১০ বছরে তা হলে কী করেছে শাসকদল? ভিড় নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়়েনি বিরোধীরা। এক বিজেপি নেতার প্রশ্ন, ‘‘এত আয়োজন, এত এত বাস, কিন্তু লোক কোথায়।’’ বাস মালিক সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮০টি বাস গিয়েছে খয়রাশোলের জন্য। তৃণমূল অবশ্য দাবি করছে, হাজার দশেক লোক এসেছিলেন সভায়।