পরিযায়ী শ্রমিক হেমন্ত মাহাতোর বাগানে ধরেছে আম। নিজস্ব চিত্র।
এক সময় বেশি রোজগারের আশায় পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন। এখন সেই হাতেই বাড়ির কাছে পতিত জমিতে তৈরি করেছেন আমবাগান। ঝালদা ১ ব্লকের ম্যাটালা গ্রামের হেমন্ত মাহাতোর সেই আমবাগান এখন এলাকাবাসীর আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। হিমসাগর থেকে আম্রপালি, লক্ষণভোগ, মল্লিকা, ল্যাংড়া— কী নেই তাঁর বাগানে। ঝালদা শহর থেকে তুলিন যাওয়ার রাস্তায় বানসা পাহাড়ের কোলে হেমন্তের আম বাগান দেখতে অনেকেই আসছেন।
হেমন্ত জানান, সামান্য জমিতে তাঁর বাবা চাষ করতেন। তাই বেশি রোজগারের জন্য তিনি হিমাচল প্রদেশে নির্মাণ কাজে গিয়েছিলেন। সেখানে বছর খানেক কাজ করেন। তখন এলাকারই কয়েকজনের পরামর্শে তিনি নিজের সামান্য জমিতে আমের চাষ শুরু করেন। তা জানতে পেরে এগিয়ে আসে প্রশাসন। বানসা পাহাড়ের কাছে হেমন্তদের সাত বিঘা পতিত জমি রয়েছে। সেখানেই একশো দিন কাজের প্রকল্প এবং উদ্যান পালন দফতরের সহযোগিতায় আমের চাষ আরও বড় আকারে শুরু হয়।
হেমন্তের কথায়, ‘‘তারপরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। আমার বাগানের আমের কোনও তুলনা হয় না। পড়শি ঝাড়খণ্ড থেকে উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির আম। ব্যবসায়ীরা আসছেন। স্থানীয় বাজারে আমরাও নিয়ে যাচ্ছি।’’
আমের পাশাপাশি কয়েক বছর ধরে পেয়ারা এবং লেবু চাষও শুরু করেছেন। হেমন্তের স্ত্রী বালিকাও বাগানের কাজে হাত লাগান। তিনি বলেন, ‘‘এই বাগানই একদিন আমাদের সুদিন ফেরাবে।’’
বিডিও (ঝালদা ১) মদনমোহন মুর্মু হেমন্তের বাগান দেখে গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘ওই বাগানে আমের ফলন দেখে বেশ অবাক হয়েছি। আমের স্বাদও বেশ ভাল।’’
প্রশাসন জানাচ্ছে, ইতিমধ্যে উদ্যানপালন দফতর থেকে ওই বাগানে সেচকুয়ো করে দেওয়া হয়েছে। জলের পাম্প দেওয়া হয়েছে। বাগানে তৈরি করা হয়েছে জৈব সার তৈরির পরিকাঠামো। ঝালদা ১ ব্লকের উদ্যান পালন দফতরের পরামর্শদাতা সুদীপকুমার চট্টরাজ বলেন, ‘‘বিকল্প চাষ করে এলাকার চাষিদের অনুপ্রাণিত করছেন হেমন্ত। দফতরের তরফে আমরা তাঁর পাশে আছি।’’