বিশ্বভারতীর তরফে অমর্ত্যকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, তাঁরা মাপজোক করে দেখেছেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দখল করে রেখেছেন অর্থনীতিবিদ। ফাইল চিত্র।
জমি-বিতর্কে নিয়ে এ বার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পাল্টা কটাক্ষ করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর তরফে অমর্ত্যকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, তাঁরা মাপজোক করে দেখেছেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দখল করে রেখেছেন অর্থনীতিবিদ। অমর্ত্যের শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র ঠিকানায় চিঠি দিয়ে বলা হয়, অবিলম্বে ১৩ ডেসিম্যাল জমি ফেরত দিতে হবে। এ নিয়ে অমর্ত্যকে নিশানাও করেছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন অর্থনীতিবিদ। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ যদি আপনার বাড়িতে এসে বলে এটা আমার জমি... আমিও ভাইস চান্সেলরের বাড়িতে যেতে পারতাম। বলতাম, এই ঘরে আমার পিতামহ থাকতেন। এই জায়গা আমার পরিচিত। এখানে কিছু লোক এনে আমি (জমি) মাপতে চাই, কার কতটা অংশ।’’ উপাচার্যের প্রসঙ্গে অমর্ত্য বলেন, ‘‘আমি বিমর্ষ হয়ে পড়ছি, লোকটার চিন্তা-ভাবনা দেখে।। এখানে অবিচার হচ্ছে, কর্তৃপক্ষ কেন ভাবছেন না?’’
অমর্ত্যের শান্তিনিকতনের বাড়ি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে আইনি জটিলতা চলছে। ওই জমি তাঁদের, এই অবস্থানে অনড় বিশ্বভারতী। তবে অমর্ত্য সেই দাবি নস্যাৎ করে জানিয়েছিলেন, ওই জমি তাঁর বাবার কেনা। ৫০ বছর পর হঠাৎ কেন বিতর্কের সৃষ্টি হল, সেটাই তাঁর বোধগম্য হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন। পাশাপাশি বিশ্বভারতীর অভিযোগকে ‘কল্পনাপ্রসূত’ বলেছিলেন। এই জমি-বিতর্কে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের কটাক্ষ ছিল, ‘‘বিশ্বভারতীর সকলকে আমরা রাবীন্দ্রিক বলি। আমি অন্যায় করলেও রাবীন্দ্রিক। আমি জমি কব্জা করলেও রাবীন্দ্রিক। আমি যদি বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে গালিগালাজ করি, সেটাও রাবীন্দ্রিক।’’
বৃহস্পতিবার এই সব প্রসঙ্গে অমর্ত্য বলেন, ‘‘আগেও আইনি ভাবে উত্তর দেওয়া হয়েছে। এ বারও আমার উকিল দেখবেন।’’ তবে বিশ্বভারতীর এই পদক্ষেপ নিয়ে তিনি বিস্মিত বলে জানান। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই আমাকে পছন্দ করেন না। তাঁরাও এর পিছনে থাকতে পারেন।’’ তবে এই বিতর্ক এক দিন থামবে বলেই আশা করছেন তিনি। বলেন, ‘‘ধরে নিচ্ছি উনি (উপাচার্য) যে ব্যবহার করেন, সে রকম ব্যবহার অন্য কেউ করবেন না।’’
বিশ্বভারতীতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছেন ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের একাংশ। উপাচার্যের বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার অমর্ত্যের সঙ্গে দেখা করে বিশ্বভারতীর বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন ওই ছাত্রছাত্রীরা। কী ভাবে এ সব সমস্যার সমাধান হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন করতে শোনা যায় অমর্ত্যকেও।