Aalchiki coronavirus

পোস্টার এল অলচিকিতেও

প্রশাসন ও স্বাস্থ্যকর্তাদের কথায়, বীরভূমে যেহেতু আদিবাসী জনজাতি ( সাঁওতাল) সম্প্রদায়ের অনেক মানুষের বাস, তাই তাঁদের কথা মাথায় রেখেই  বাংলার পাশাপাশি অলচিকি হরফে লেখা হয়েছে করোনা-সচেতনতা। পোস্টারে লেখা আছে, এই ভাইরাস প্রতিরোধে কী ভাবে সতর্ক থাকতে হবে এবং কী কী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২০ ০২:০৮
Share:

অলচিকি হরফে লেখা ৫ হাজার এমনই পোস্টার এসেছে। নিজস্ব চিত্র

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে একমাত্র রাস্তা জন সচেতনতা। সেই সচেতনতা প্রচারে ৭০ হাজার পোস্টার এল বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায়। সেই পোস্টারগুলির মধ্যে ৫ হাজার অলচিকি হরফে লেখা।

Advertisement

প্রশাসন ও স্বাস্থ্যকর্তাদের কথায়, বীরভূমে যেহেতু আদিবাসী জনজাতি ( সাঁওতাল) সম্প্রদায়ের অনেক মানুষের বাস, তাই তাঁদের কথা মাথায় রেখেই বাংলার পাশাপাশি অলচিকি হরফে লেখা হয়েছে করোনা-সচেতনতা। পোস্টারে লেখা আছে, এই ভাইরাস প্রতিরোধে কী ভাবে সতর্ক থাকতে হবে এবং কী কী স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পোস্টার লাগানোর নির্দেশের মূল কারণ, পড়ুয়াদের সচেতন করা।’’ পড়ুয়াদের সচেতন করলে তারা বাড়ির লোকজন এবং নিজেদের এলাকার মানুষকেও সচেতন করতে পারবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

তবে, অলচিকি হরফে লেখা পোস্টার কতটা কাজে আসবে, সেটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আদিবাসী মানুষজনই। তাঁদের প্রশ্ন, ঠিক কত জন জানেন এই হরফ। শিক্ষক তথা আদিবাসী নেতা সুনীল সরেনের কথায়, ‘‘এই জেলায় অলচিকিতে পঠনপাঠনের পরিকাঠামো গড়েই ওঠেনি সে ভাবে। হাতেগোনা দু-চারটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সবে অলচিকিতে পড়ানো শুরু হয়েছে। সেখানে বাংলায় লেখা পোস্টারই বেশি কাজে আসবে।’’

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার পোস্টার আসার পর থেকেই সেগুলিকে যথযথ ভাবে বিলি করার ব্যবস্থা হয়েছে। জেলাশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতিটি ব্লকের বিডিও-দের পোস্টার দেওয়া হয়েছে। যাতে

গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত প্রচার চালানো যায়। ঠিক হয়েছে জেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও একাধিক পোস্টার লাগানো হবে। অন্য দিকে, বীরভূম স্বাস্থ্যজেলার মধ্যে থাকা পুরসভা এবং মহকুমা ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র

পোস্টার পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর থেকেই।

গত ৬ মার্চ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা মেনে একটি বৈঠক করেন জেলাশাসক। জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা, সিএমওএইচ, সিউড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার,

বিএমওএইচ, সব বিডিও, রেডক্রস সোসাইটি প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ওই বৈঠকের মূল আলোচ্য ছিল, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের গাইডলাইন মেনে এই রোগের সংক্রমণ

আটকাতে কী করা উচিত কী নয়, সে ব্যাপারে জন সচেতনতা গড়ে তোলা। ওই দিন বিকেলেই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন জেলা প্রশাসনের ও স্বাস্থ্য কর্তারা। সেখানেও সবিস্তার আলোচনা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা সংক্রমণকে প্যানডেমিক বা অতিমারি (মহামারির চেয়েও ভয়াবহ) ঘোষণা করেছে। এ দেশেও ১৭ রাজ্যে করোনা ছড়িয়েছে। সেই জন্যই রোগ ঠেকাতে প্রচারকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে

বলে মনে করাচ্ছেন স্বাস্থ্য ও প্রশাসনিক কর্তারা। হিমাদ্রিবাবু বলেন, ‘‘জেলার প্রতিটি ক্লাবকে এ ব্যাপারে সজাগ করা যায় কিনা, সেটা দেখতে বিএমওএইচদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ দু-এক দিনের মধ্যেই প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে সচেতনতা প্রচার চলবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement