পরিদর্শন: ঘটনাস্থলে প্রশাসনের আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র।
আদিবাসীর নামে কেনা জমিতে কাপড়ের কারখানা গড়ে তোলার অভিযোগ উঠল শান্তিনিকেতনের বোনেরপুকুরডাঙ্গা এলাকায়। আদিবাসীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে ওই জমির ক্রেতার বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার এলাকায় পরিদর্শনে যান প্রশাসনের কর্তারা। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দেখা হবে বলে তাঁরা গ্রামবাসীদের আশ্বস্ত করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রূপপুর পঞ্চায়েতের বোনেরপুকুরডাঙ্গার দক্ষিণ অংশে বৈধ কাগজপত্রহীন কয়েক শতক জমি রয়েছে। সেই জমিটি বেশ কয়েক বছর আগে এক আদিবাসীর নামে কিনে ওই জমিতে থাকা বেশ কিছু গাছ কেটে ফেলারও অভিযোগ ওঠে বোলপুরের এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। সেই সময় স্থানীয় মানুষজন বোলপুরের মহকুমাশাসক থেকে শুরু করে বিডিও, ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান।
প্রশাসনের তরফে বলা হয়, জমিটি কার নামে রয়েছে, তা সঠিক ভাবে না-জানতে পারা পর্যন্ত জমিতে কোনও নির্মাণকাজ করা যাবে না। অভিযোগ, এর পরে কিছুদিন বন্ধ থাকলেও ফের প্রশাসনের নজর এড়িয়ে শুরু হয়ে যায় নির্মাণকাজ। বৃহস্পতিবার এই নিয়ে সরব হন ওই এলাকার তিনটি আদিবাসী সংগঠনের মানুষজন।
খবর পেয়ে এ দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন ব্যাকওয়ার্ড ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ট্রাইবাল ডেভলপমেন্ট ইন্সপেক্টর দীপ্তেশ প্রধান ও রূপপুর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা। তাঁরা গ্রামবাসীদের কাছে সমস্ত অভাব অভিযোগ শোনেন। শুক্রবার এই মর্মে ব্লক অফিসে এলাকার মানুষজন এবং ওই জায়গায় যাঁরা নির্মাণ কাজ করছেন, তাঁদের বৈধ কাগজপত্র নিয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী গাঁওতার বোলপুর শাখার সম্পাদক বৈদ্যনাথ মুর্মু বলেন, “এই ভাবে আদিবাসীদের জমি নানা জায়গায় দখল করে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ করুক, এটাই আমাদের আবেদন।’’ দীপ্তেশবাবু বলেন, “এ ভাবে আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর করা যায় না। আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর করতে হলে জেলা থেকে অনুমতি নিতে হয়। আদৌ ওই জমিটির কাগজপত্র ঠিক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রণেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘‘বহু আগে থেকেই ওই জমির মালিকানা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ওখানে যে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে, তার কোনও কাগজ আমরা এখনও হাতে পাইনি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “আমার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। জমিটি আমার মালিকাধীন। কিছু মানুষ নিজের স্বার্থে মিথ্যা অভিযোগ আনছেন।” ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সঞ্জয় রায় বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”