সরতে হচ্ছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে

শেষ অবধি পদ থেকে সরানোই হচ্ছে অযোধ্যা পাহাড় আশ্রমধর্মী আবাসিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঈদ আনসারিকে। পুরুলিয়া জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ ওঠায় ক্ষুব্ধ খোদ জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:২৯
Share:

শেষ অবধি পদ থেকে সরানোই হচ্ছে অযোধ্যা পাহাড় আশ্রমধর্মী আবাসিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সঈদ আনসারিকে। পুরুলিয়া জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ ওঠায় ক্ষুব্ধ খোদ জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক)।

Advertisement

উল্লেখ্য, ছাত্রাবাসে খাবারের মান ভাল নয়, প্রয়োজনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে স্কুলে বা ছাত্রাবাসে পাওয়া যায় না, ছাত্রাবাসের রান্নার মুদিখানার মালপত্র তাদের বইতে হয়, বাথরুম তাদেরই পরিষ্কার করতে হয়— এমন নানা অভিযোগ তুলে গত ৪ সেপ্টেম্বর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ঘেরাও করেছিল পড়ুয়ারা। বিকেল পর্ন্ত শিক্ষকদের তালাবন্ধ রাখা হয়। পড়ুয়াদের বিক্ষোভে ভন্ডুল হয়ে যায় শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। জেলা স্কুল পরিদর্শক রাধারাণি মুখোপাধ্যায় পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রতিশ্রুতি দিলে ঘেরাও তোলে ছাত্রেরা। সোমবারই অয়োধ্যা পাহাড়ের মাথায় ওই স্কুলে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন রাধারানিদেবী। উপস্থিত অভিভাবকদের সঙ্গেও কথা বলেন।

রাধারাণিদেবী বুধবার বলেন, ‘‘আমি পড়ুয়াদের কাছে জানতে চেয়চিলাম, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে তারা চায় কিনা। প্রায় সবাই হাত তুলে জানিয়েছে, তারা তাঁকে এই পদে চায় না। পড়ুয়ারাই যখন বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে চাইছে না, তখন তাঁকে ওই পদে রেখে লাভ নেই। তাই ওই পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে অন্য এক জনকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, দু’টি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। একটি কমিটি ছাত্রাবাস পরিচালনার বিষয়টি দেখভাল করবে। অন্য কমিটি দেখবে স্কুল পরিচালনার বিষয়টি। পড়ুয়ারা যে সমস্ত অভিযোগে সরব হয়েছিল, সরেজমিন তদন্তে গিয়ে তার সত্যতা মিলেছে কিনা জা নতে চাওয়া হলে স্কুল পরিদর্শক বলেন, ‘‘কিছু বেনিয়ম তো নজরে এসেইছে। অভিভাবকদেরও কিছু ক্ষোভ রয়েছে। এই স্কুলে মিড-ডে মিলও হয় না। ছাত্র প্রতি মাসে সাড়ে ৭০০ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এই অর্থ দেয় অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর। এই বরাদ্দে গোটা মাস চালানো কষ্টকর বলেও আমাকে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক।’’ এ প্রসঙ্গে জেলা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের আধিকারিক মিথিলেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলার এ ধরনের অন্য ছাত্রাবাসগুলিতেও তো মাথাপিছু ৭০০ টাকাই বরাদ্দ রয়েছে। অযোধ্যার স্কুলে কী ভাবে বরাদ্দ বাড়ানো সম্ভব!’’ পড়ুয়াদের ক্ষোভের আঁচ পেয়ে সোমবার ওই স্কুলে গিয়েছিলেন জেলা পরিষদের শিক্ষা বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ সুষেণচন্দ্র মাঝিও। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এই মর্মে জেলা স্কুল পরিদর্শকই সিদ্ধান্ত নেবেন। গোটা বিষয়টি তিনি নিজে দেখছেন। স্কুলের পড়াশোনা ঠিকঠাক ভাবে হোক, এটাই আমরা চাই।’’

Advertisement

সঈদ আনসারির আবার বক্তব্য, তিনি এখনও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবেই কাজ করছেন। তাঁকে পদ থেকে সরানো হয়েছে, এই মর্মে কোনও লিখিত নির্দেশ তিনি পাননি। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘এ ভাবে শিক্ষাবর্ষের মাঝখানে কাউকে পদচ্যুত করা যায় কি? এই সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্তি।’’ পড়ুয়াদের আন্দোলনের পিছনে কোনও কোনও মহলের উস্কানি ছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement