—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে জেলায় দলের শক্তি যাচাইয়ে আজ, রবিবার কলকাতায় যুব সংগঠন ডিওয়াইএফের ব্রিগেড সমাবেশকেই বেছে নিয়েছে সিপিএম। তাই জেলা থেকে বড় সংখ্যায় মানুষজনকে ব্রিগেডে পাঠাতে ডিওয়াইএফ-এর থেকে সিপিএম নেতৃত্বের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে বেশি।
সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “প্রত্যেক এরিয়া কমিটি থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে কর্মীদের ব্রিগেড নিয়ে যাওয়ার জন্য। বাস, অসংখ্য ছোট গাড়ি ও ট্রেনে কর্মীরা যাবেন। জেলা থেকে অন্তত ২০ হাজার মানুষ ব্রিগেড যেতে চলেছেন।”
সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের দাবি, “যৌবনের ডাকে জনতার ব্রিগেড হয়ে উঠেছে। আমাদের জেলা থেকে প্রায় আট হাজার মানুষ ব্রিগেডে যাচ্ছেন।” তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা কতটা পূরণ হয়, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
সম্প্রতি ডিওয়াইএফ-এর ইনসাফ যাত্রার নেতৃত্ব দিয়ে ব্লকে ব্লকে ঘুরে গিয়েছেন যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। গ্রামে গ্রামে প্রচারে নেমেছিল সিপিএমও। গ্রাম ভিত্তিক জাঠা, ছোট ছোট বৈঠক, পথসভা করে ইনসাফ যাত্রার দাবি দাওয়া ও দেশ-রাজ্যের বর্তমান সঙ্কটময় পরিস্থিতির কথা তুলে ধরা হয়।
ঘটনা হল, বাম আমলে সিপিএমের গড় হিসেবে পরিচিত বাঁকুড়া জেলায় গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে সমানে ধাক্কা খেয়েছে সিপিএম। দুই ভোটে বামের ভোট বিজেপির ঝুলি অনেকাংশ ভরিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি। তবে পুরভোট ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজেদের ভোট কিছুটা বাড়িয়ে স্বস্তি পেয়েছে সিপিএম। এই পরিস্থিতিতে যুব সংগঠনের ডাকা ব্রিগেড সমাবেশে জেলায় নিজেদের শক্তি জরিপের সুযোগ এসেছে বলে মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্বের একাংশ।
সিপিএমের বাঁকুড়ার এক জেলা নেতার কথায়, “ছোট ছোট সভা, পাড়া বৈঠকের মাধ্যমে আমরা মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছি। সাড়া ভালই পেয়েছি। শ্রমিকশ্রেণির মানুষের মধ্যে লড়াই করে নিজেদের অধিকার আদায়ের তাগিদ তৈরি করতে আমরা মরিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে আমরা কতটা সফল হচ্ছি, ব্রিগেডে মানুষের উপস্থিতি দেখে অনেকটাই টের পাওয়া যাবে।”
তবে দলের অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে পর্যাপ্ত সংখ্যায় বাস ভাড়া করা যাচ্ছে না বলে নেতৃত্ব জানাচ্ছেন। শনিবার বিকেল পর্যন্ত খবর, বাঁকুড়া জেলা ও জেলার বাইরে থেকে ১৪৯টি বাস ভাড়া করা হয়েছে। ট্রেনেও কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিপিএমের বড়জোড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুজয় চৌধুরী বলেন, “সারা ব্লক থেকে দু’হাজারের বেশি মানুষ ব্রিগেডে যেতে চান। ২২টি বাস ভাড়া করেছি। বাকিরা দুর্গাপুর থেকে ট্রেনে উঠবেন।”
কটাক্ষ করতে ছাড়েনি অন্য দলের নেতারা। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের দাবি, “তৃণমূলের ‘বি টিম’ হল সিপিএম। ওরা ভোট কাটুয়ার ভূমিকা নিয়ে তৃণমূলকে জেতাতে চায়। মানুষ এটা জানে।’’
তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরূপ চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, “সিপিএমের ডাকে আদৌ কত মানুষ ব্রিগেডে যাবেন, সেটা সময়ই বলবে।”