শিক্ষক সংগঠনগুলির ‘আপত্তি’
Agitation

প্রাথমিকে বদলির নির্দেশ ঘিরে ক্ষোভ

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) প্রাশান্তকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, বদলির ফলে যাতে এক জন শিক্ষকের উপরে পুরো স্কুলের দায়িত্ব না পড়ে, সেটা দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, সে রকম ক্ষেত্রে বদলি চাওয়া শিক্ষক বা শিক্ষকদের ‘রিলিজ় অর্ডার’ দেওয়া হচ্ছে না।

Advertisement

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২০ ০৪:০৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক সঙ্গে অনেকের বদলির নির্দেশ ঘিরে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে পুরুলিয়া জেলার প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে।

Advertisement

জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, পুরুলিয়ায় কর্মরত ৩০৪ জন শিক্ষকে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নিজের নিজের জেলায় বদলির নির্দেশ পাঠিয়েছে। তাঁরা মূলত পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, নদিয়া, পশ্চিম বর্ধমান ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বাসিন্দা। কয়েকজনের বদলির প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে জেলা বিদ্যালয় দফতর। আর এতেই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের অন্দরে। সিপিএমের শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের (প্রাথমিক) কাছে বদলির প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছে।

তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি প্রকাশ সিংহ দেও বলেন, ‘‘এত শিক্ষককে এক সঙ্গে বদলি করাটা কাঙ্ক্ষিত ছিল না। এর ফলে, পুরুলিয়ায় প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা তৈরি হবে।” তবে এ ক্ষেত্রে তাঁদের কার্যত কিছুই করার নেই বলে জানাচ্ছেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) প্রশান্তকুমার মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পুরুলিয়াতে কর্মরত ভিন্ জেলার শিক্ষকেরা নিজেদের জেলায় বদলির জন্য রাজ্য শিক্ষা দফতরে আবেদন জানিয়েছিলেন। সে প্রেক্ষিতেই রাজ্য থেকে বদলির নির্দেশ এসেছে।’’

Advertisement

শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ছাত্রসংখ্যার অনুপাতে শিক্ষকের ঘাটতি রয়েছে জেলায়। পুরুলিয়াতে প্রাথমিক স্কুল রয়েছে ২,৭২৭টি। বহু স্কুলে শতাধিক পড়ুয়া থাকলেও, শিক্ষক রয়েছেন দু’জন করে। এবিপিটিএর পুরুলিয়ার সভাপতি নিলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, স্কুলে ৪০ জন পড়ুয়া পিছু এক জন শিক্ষক থাকার কথা। এত শিক্ষককে বদলি করা হলে, সে অনুপাত নষ্ট হবেই। সঙ্গে বহু স্কুলে এক জন করে শিক্ষক পড়ে থাকবেন। স্কুল পরিচালনা করা কোনও ভাবেই একা কারও পক্ষে সম্ভব হবে না।’’

তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি প্রকাশবাবু বলেন, ‘‘এই বদলির ফলে, জেলার প্রাথমিক শিক্ষার ভিত অনেকটা নষ্ট হয়ে যাবে। বিষয়টি আমরা দলের জেলার শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাব।” তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতা সিদ্ধার্থ পাল বলেন, ‘‘ভিন্ জেলার শিক্ষকদের নিজেদের জেলায় বদলি করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার বহু শিক্ষক ৭০-৮০ কিলোমিটার দূরের স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। তাঁরা বহু দিন আগে বদলির আবেদন করে রেখেছেন। তাঁদের বদলির কোনও ব্যবস্থাই হচ্ছে না।”

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) প্রাশান্তকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, বদলির ফলে যাতে এক জন শিক্ষকের উপরে পুরো স্কুলের দায়িত্ব না পড়ে, সেটা দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, সে রকম ক্ষেত্রে বদলি চাওয়া শিক্ষক বা শিক্ষকদের ‘রিলিজ় অর্ডার’ দেওয়া হচ্ছে না। অন্য স্কুল থেকে শিক্ষক আনার পরেই তা দেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement