শান্তিনিকেতনের সর্বানন্দপুরে প্রাক্তন পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখলের অভিযোগে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ শনিবার। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি জমি দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে শান্তিনিকেতন থানার সর্পলেহনা-আলবাঁধা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সর্বানন্দপুর এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের তির কলকাতার এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে। সরকারি জমি ফেরতের দাবিতে শনিবার এলাকায় বিক্ষোভও দেখান স্থানীয়েরা। ওই জমিতে সরকারি জমির বেশ কিছুটা অংশ থেকে যাওয়ার বিষয়টি মেনেছেন বোলপুর-শ্রীনিকেতনের বিডিও নিজেও। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে তিনি।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, সর্বানন্দপুর গ্রামে ১ একর ৮০ শতক জায়গার উপরে থাকা একটি বাড়ি একটি বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে কয়েক বছর আগে কিনেছিলেন কলকাতার এক বাসিন্দা। বাড়িটি নতুন করে মেরামত ও কিছু অংশে বাগান তৈরি করান তিনি। মাঝেমধ্যে তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকজন এখানে আসতেন। সম্প্রতি গ্রামবাসীদের একাংশ পঞ্চায়েত প্রধানকে জানান যে, ওই বাড়িটি যে জমির উপরে রয়েছে, তাতে সরকারি জমির অংশও আছে।
সর্পলেহনা-আলবাঁধা পঞ্চায়েতের দাবি, তারা ওই জায়গাটি মাপজোকের জন্য একাধিক বার বাড়ির বর্তমান মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি আসেননি। এর পরেই পঞ্চায়েতের তরফে বিডিও-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। বুধবার ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক এবং পঞ্চায়েত প্রধানের উপস্থিতিতে ওই জমিটি মাপজোক করা হয়। তাতে দেখা যায়, জায়গাটি সরকারি জমির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
সেই জমি পুনরুদ্ধারের দাবিতেই এ দিন ওই জমির সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়েরা। তাতে শামিল হন পঞ্চায়েত প্রধান দীননাথ ভট্টাচার্যও। সর্বানন্দপুরের বাসিন্দা বিবেকানন্দ দেবাংশী, পাপুমণি মাড্ডিরা বলেন, “কিছুজনের কাছে আমরা জানতে পারি, জায়গাটি সরকারি জমি। আমরা পঞ্চায়েতকে বিষয়টি জানাই। মাপজোক করে দেখা গিয়েছে, আমাদের কথাই সত্যি। আমরা চাই সরকারি জমি দখল মুক্ত করে, গ্রামবাসীদের উন্নয়নের কাজে লাগানো হোক।’’ প্রধান বলেন, “কেউ বাইরে থেকে এসে সরকারি জমি দখল করে রাখবেন, এটা আমরা কোনও ভাবেই মেনে নেব না। গ্রামবাসীদের কথা মতো জমিটি দখলমুক্ত করতে হবে।”
বিডিও শেখর সাঁই বলেন, “স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে অভিযোগ পাওয়ার পরেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে জমিটি মাপার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেখানেই দেখা যায়, ওই জমির অনেকটা সরকারি জমির অন্তর্ভুক্ত। এর আগেও এই অঞ্চলে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জমির বর্তমান মালিকের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। জমি দেখভালের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিও এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।