এমনই অবস্থা বাড়িটির। নিজস্ব চিত্র
মেলেনি সরকারি ভাতা ও বাড়ি। ফলে ভাঙা ঘরেই অভাবে দিন কাটছে বৃদ্ধ ও বৃদ্ধার।
মহম্মদবাজার পঞ্চায়েতের এক নম্বর সংসদের বোদমাটি ডাঙ্গালপাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন সনাতন দলুই ও তাঁর স্ত্রী সরস্বতী দলুই। বাড়িতে এই দু’জন আর কেউ নেই। ৬২ বছর বয়স্ক সনাতনবাবু ও ৫৪ বছর বয়স্ক সরস্বতীদেবী সরকারি ভাতা পাননি। গ্রামের বহু মানুষের সরকারি বাড়ি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সেই বাড়ির তালিকাতেও নাম নেই এনাদের। তাই ভাঙা বাড়িতেই বসবাস করছেন দু’জনে।
রাতে পাহারার কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনও রকমে দিন কাটে। বহুবার স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও পঞ্চায়েতে জানিয়েও বাড়ির ও সরকারি ভাতার ব্যবস্থা হয়নি বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে পাহারাদারের কাজ করেই চালাতে হয় সংসার।
সরস্বতীদেবী বলেন, ‘‘গ্রামে বহু মানুষের সরকারি বাড়ি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আমাদের কেউ বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছে না। গ্রামের অনেক মানুষ রয়েছেন যারা সরকারি ভাতাও পাচ্ছেন। কিন্তু আমাদের কেউ এই ব্যবস্থা করে দিচ্ছে না।’’ সনাতনবাবু সংসার চালাতে পাঁচামির একটি ক্রাশারে রাতপাহারার কাজ করেন। তা দিয়েই চালাতে হয় সংসার। যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে ওষুধ কিনতেই অর্ধেক টাকা খরচ হয়ে যায়। সনাতনবাবু বলেন, ‘‘বাড়ির অবস্থা এত খারাপ বৃষ্টি হলেই ভিতরে জল পড়ে। কিন্তু উপায় নেই, তাই বাধ্য হয়ে এই বাড়িতেই দিন কাটছে। যখনই গ্রামে কেউ আসে বাড়ি ও ভাতা দেওয়ার কথা বলেন। তারপর ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে হারিয়ে যায়।’’
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য কেয়া সাহা বলেন, ‘‘আমি বিজেপি প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়েছি। কিন্তু পঞ্চায়েত তৃণমূলের পক্ষ থেকে পরিচালনা করা হয়। তাই এই এলাকায় তেমন সরকারি কাজ ও সরকারি অনুদান দেওয়া হয় না।’’ পঞ্চায়েত প্রধান উমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘আমরা পঞ্চায়েতের কাজের জন্য ভেদাভেদ করিনা। ঘরের তালিকায় ওঁদের নাম থাকলে বাড়ি পাওয়ার ব্যবস্থা করব। বয়সের প্রমাণপত্র দেখে ভাতা পাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’