আবার ঝালদা পুরসভার চেয়ারম্যান হচ্ছেন শীলা চট্টোপাধ্যায়।
অবশেষে জট খুলছে পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভার। মঙ্গলবার পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনের পর পুরুলিয়ার জেলাশাসকের পাঠানো রিপোর্টের ভিত্তিতে কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, মঙ্গলবারই নতুন পুরপ্রধান শপথ নিচ্ছেন শীলা চট্টোপাধ্যায়। স্বাভাবিক ভাবেই ঝালদায় খুশির হাওয়া কংগ্রেস মহলে। এ নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে শীলা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। সত্যের জয় হয়েছে। ঝালদা পুরসভা এলাকার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার জয় হয়েছে।’’
১২ আসনের ঝালদা পুরসভার ৫ কাউন্সিলর তৃণমূলের এবং ৫ কাউন্সিলর কংগ্রেসের। পরে ২ নির্দল কাউন্সিলরের মধ্যে এক জন যোগ দেন কংগ্রেসে। হাই কোর্টের নির্দেশে সোমবারই ছিল ঝালদার পুরপ্রধান নির্বাচন। তাতে দলীয় এবং নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থনে পুরসভার বোর্ড গঠন করে কংগ্রেস। পুরপ্রধান পদে নির্বাচিত হন শীলা। তৃণমূল কাউন্সিলররা সোমবার পুরসভায় উপস্থিত থাকলেও ভোটপ্রক্রিয়ায় অংশ নেননি। বরং অনিয়মের অভিযোগ করে প্রশাসনের কাছে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা। অন্য দিকে, তৃণমূলের ৪ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ব্যালট পেপার চুরির অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। এই রাজনৈতিক চাপান-উতোরের মধ্যে পুরপ্রধান হিসাবে শপথ নিচ্ছেন শীলা।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ঝালদার নিহত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই আশা নিয়ে লড়াই করেছি। আজ (মঙ্গলবার) আমাদের সেই ইচ্ছা পূরণ হল। সত্যের জয় হয়েছে।’’
যদিও এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে দলীয় স্তরে আলোচনা চলছে।’’ পুরুলিয়ার জেলাশাসক রজত নন্দার প্রতিক্রিয়া, ‘‘উচ্চ আদালতের নির্দেশ কার্যকরী করা হচ্ছে। আদালতের নির্দেশ অনুসারেই কাজ হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মার্চ ঝালদা শহরে সান্ধ্যভ্রমণ করতে বেরিয়ে খুন হয়েছিলেন সদ্যনির্বাচিত কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন। তাঁকে কাছ থেকে গুলি করে পালায় আততায়ীরা। তার পর এই ঘটনায় তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। প্রথম দিকে এই খুনের ঘটনায় জেলাপুলিশ সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করে। পরে হাই কোর্টের নির্দেশে তদন্তভার হাতে নেয় সিবিআই। ঝালদায় আবার ভোট হয়। গত বছর ডিসেম্বরেও কংগ্রেস পুরবোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে। কিন্তু, তার আগেই আচমকা চেয়ারপার্সন নিয়োগ করে রাজ্য সরকার। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, রাজ্যের পুর আইনের ১৭ (৪) ধারা অনুযায়ী এই নিযুক্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস।