—ফাইল চিত্র
কর্মিসভার এক সদস্যকে বদলির প্রতিবাদে শনিবার বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছিল বিশ্বভারতীতে। সেই ঘটনায় রবিবার কর্মিসভার সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ সরকার-সহ ৩০ জন কর্মীকে শো-কজ করলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে উপাচার্যের অফিস চত্বরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ তুলে কর্তৃপক্ষ কর্মিসভার বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগও জানান।
এক কর্মীকে কলকাতার গ্রন্থন বিভাগে বদলি করার প্রতিবাদে শনিবার বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় দফতরে উপাচার্যের অফিস তালাবন্ধ করে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখায় কর্মিসভা। বিক্ষোভের সময় পৌষমেলা নিয়ে একটি বৈঠকে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান বিশ্বভারতীর কর্মিমণ্ডলী এবং কর্মী পরিষদের কিছু সদস্য। নিজেদের কিছু সমস্যা নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান কয়েক জন পড়ুয়াও। উপাচার্যের অফিসে তালাবন্ধ থাকায় তাঁরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। উপাচার্যের দফতরে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখানো কর্মিসভার সদস্যদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তাঁরা অন্য একটি দরজা দিয়ে উপাচার্যের ঘরে ঢোকেন ও বৈঠক করেন। সব মিলিয়ে শনিবার কার্যত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় উপাচার্যের অফিস চত্বরে।
বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং আইন মেনে আন্দোলন করা হয়নি, এই অভিযোগেই কর্মিসভার সাধারণ সম্পাদক-সহ ৩০ জন কর্মীকে শো-কজ করা হয়েছে। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার এ দিন বলেন, ‘‘এটি একটা রুটিন বদলি। কারও যদি কোনও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকে, সেটা উপযুক্ত পদ্ধতিতে কর্তৃপক্ষকে জানানো যায়। কিন্তু, শনিবার বিশ্বভারতীতে যে গুন্ডামি করা হয়েছে, সেই গুন্ডামি কোনও ভাবেই বিশ্বভারতী বরদাস্ত করবে না। এই গুন্ডামি রোখার জন্য বিশ্বভারতী আইন মেনে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’
কর্মিসভার সাধারণ সম্পাদক বিদ্যুৎ সরকার বলেন, ‘‘শনিবারের ঘটনার জন্য আমাদের সংগঠনের ৩০ জন কর্মীকে শো-কজ করেছেন কর্তৃপক্ষ। আমরা শো-কজের চিঠি পেয়েছি। যথা সময়ে আমরা চিঠির উত্তর দেব।’’ তাঁর আরও দাবি, যে কর্মীকে বদলি করা হয়েছে, তাঁর মায়ের শরীর খুব খারাপ। এই সময়ে ওই কর্মীকে কলকাতার গ্রন্থন বিভাগে পাঠানো হলে তিনি মায়ের দেখভাল করতে পারবেন না। বিদ্যুৎবাবুর বক্তব্য, ‘‘তাই আমরা শনিবার শান্তিপূর্ণ ভাবে উপাচার্যের কাছে বদলির আদেশ প্রত্যাহার করার কথা বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ সেই সময় কর্মিমণ্ডলী, কর্মী পরিষদের কিছু সদস্য চিৎকার শুরু করেন। তাতেই কিছুটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।’’ এ কথা জেনে কর্মিমণ্ডলীর সদস্য সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা কর্মিমণ্ডলীর পক্ষ থেকে পৌষমেলা নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। যে হেতু কর্মিসভা অন্যায় ভাবে উপাচার্যের অফিসের গেটে তালা বন্ধ করে রেখেছিল, তাই আমরা তালা খোলার জন্য ওঁদের বলেছিলাম। আমরা কোনও চিৎকার-চেচামেচি করিনি।’’
পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্বভারতী ও কর্মিসভার পক্ষ থেকে শনিবারের ঘটনাটি লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত এখনই এই বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।