কৃতীকে আশীর্বাদ পুরুলিয়ার জেলাশাসকের। নিজস্ব চিত্র
জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে সোমবার রমনিতা শবরের ভর্তির আবেদনপত্র জমা পড়ল সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘রমনিতা ইতিহাস নিয়ে স্নাতকোত্তরে পড়বেন। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন তাঁর পড়ার যাবতীয় খরচ জোগাবে বলে জানিয়েছে।’’
পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের সম্পাদক স্বামী শিবপ্রদানন্দ বলেন, ‘‘শবর সম্প্রদায়ের একটি মেয়ে প্রতিকূল অবস্থা থেকে উঠে এসে যে জায়গায় পৌঁছেছে, তা আনন্দ ও গর্বের। মেয়েটি যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, সে দায় আমাদের সকলের। সেই জায়গা থেকে রামকৃষ্ণ মিশন ওঁর পাশে দাঁড়াচ্ছে। আগামীদিনে আরও কেউ ওঁকে দেখে অনুপ্রাণিত হলে খুশি হব।’’
বরাবাজারের ফুলঝোড় গ্রামের বাসিন্দা রমনিতা সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের পটমদা ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ খেড়িয়া শবরকল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রশান্ত রক্ষিত জানান, খেড়িয়া শবর জনজাতির মধ্যে এই প্রথম কোনও মহিলা স্নাতক হয়েছেন। রমনিতা ইতিহাস নিয়ে ‘এমএ’ পড়তে চান। কিন্তু সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন পেরিয়ে যাওয়ায় সমস্যা বাড়ে।
এ দিন জেলাশাসকের দফতরে প্রথমে রমনিতার হাতে ফুল, কলম ও মিষ্টি তুলে দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা ছাড়াও সেখানে ছিলেন স্বামী শিবপ্রদানন্দ, বিদ্যাপীঠের প্রাক্তন শিক্ষক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রমনিতার বাবা মহাদেব শবর প্রমুখ। জেলাশাসক রেজিস্ট্রারকে বিশেষ ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করে রমনিতাকে ভর্তি নেওয়ার আবেদন জানানোর পরে সেখানেই ভর্তির আবেদনপত্র নচিকেতাবাবুকে দেওয়া হয়।
ভর্তির ব্যবস্থা হওয়ায় খুশি রমনিতা বলেন, ‘‘আমার পড়ার স্বপ্ন সার্থক হতে চলেছে, ভেবে ভাল লাগছে।’’