রঘুনাথপুরে হাসপাতাল আবাসন এলাকার এই জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছিল বাস টার্মিনাসের জন্য। নিজস্ব চিত্র।
সরকারি নির্দেশের পরে সাত বছর পার হলেও রঘুনাথপুরে বাস টার্মিনাস গড়তে প্রয়োজনীয় জমি জোগাড় করতে পারল না প্রশাসন। এ দিকে সময়ের সঙ্গে বাড়ছে বাসের সংখ্যা। অটোর সংখ্যা ছাড়িয়েছে একশো, টোটো বা ট্রেকার চলে ৫০টির বেশি। তা সত্ত্বেও রঘুনাথপুরে বাস টার্মিনাস তৈরি করে বাস, অটো, ট্রেকার রাখা ও সেখান থেকেই সেগুলির যাতায়াতের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি প্রশাসনের পক্ষে। যদিও বাস টার্মিনাস গড়তে জমির খোঁজ চলছে বলেই জানান রঘুনাথপুরের এসডিও তামিল ওভিয়া এস।
রাজ্য সরকার রঘুনাথপুরে শিল্পনগরী তৈরি করায় পরিকাঠামো মজবুত করতে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়ক সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিতে এসে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যসচিব মলয়কুমার দে মহকুমা সদর রঘুনাথপুরে রাজ্য সড়কের উপরে থাকা বাসস্ট্যান্ডটিকে সরিয়ে অন্যত্র বাস টার্মিনাস তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসনকে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই নির্দেশের পরে রঘুনাথপুর বাসস্ট্যান্ডটির আশেপাশে জমির খোঁজ শুরু করেছিল মহকুমা প্রশাসন। কাছেই রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের পাশে প্রায় দুই একর জমি পাওয়া গিয়েছিল। তবে সেই জমি স্বাস্থ্য দফতরের আওতাধীন। এ দিকে নিয়ম অনুযায়ী বাস টার্মিনাস গড়তে হলে জমি থাকতে হবে পরিবহণ দফতরের নামে। স্বাস্থ্য দফতর থেকে পরিবহণ দফতরের নামে জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরুও হলে তা ফলপ্রসূ হয়নি।
এ নিয়ে পুরুলিয়ার বাস মালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, “রঘুনাথপুরে বাসস্ট্যান্ডেই অটো, টোটো থাকে। ফলে বাসে যাত্রী পেতে সমস্যা হয়। আলাদা করে রঘুনাথপুরে শুধু বাসের জন্যই একটি টার্মিনাস প্রয়োজন। বিষয়টি প্রশাসনের গোচরেও আনা হয়েছে।”
আসরে শাসক থেকে বিরোধীও। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রঘুনাথপুর শহরের সভাপতি শৌর্য চক্রবর্তী বলেন, “শিল্পনগরী গড়ে ওঠায় রঘুনাথপুর মহকুমা সদরের গুরুত্ব আগামীতে আরও বাড়বে। স্বভাবতই যানবাহনও বাড়বে। তাই পরিকল্পিত ভাবে বাস টার্মিনাস গড়া প্রয়োজন। এ নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছি আমরা। আশা রাখছি দ্রুত জমির সমস্যা মিটিয়ে বাস টার্মিনাস তৈরি করা সম্ভব হবে।”
তবে সিপিএমের স্থানীয় নেতা প্রণবকুমার নিয়োগীর কটাক্ষ, “এমনিতেই বাসস্ট্যান্ডের জায়গা দখল করে কয়েকজন ব্যবসা চালাচ্ছে। সেই সমস্যাই মেটাতে পারছে না প্রশাসন। তাদের পক্ষে কি আদৌ বাস টার্মিনাস গড়া সম্ভব? রঘুনাথপুরের উন্নয়নে প্রশাসনের সদর্থক ভূমিকা দেখা
যায় না।”
এ নিয়ে রঘুনাথপুরের এসডিও তামিলওভিয়া এস বলেন, “বাস টার্মিনাসের জন্য জমির খোঁজ চলছে। কিন্তু যে কয়েকটি জায়গা পাওয়া গিয়েছে সেগুলি শহর থেকে অনেকটাই দূরে হওয়ায় সেখানে বাস টার্মিনাস গড়লেও লাভ হবে না। আমরা চাইছি শহরের কেন্দ্রে বা বর্তমান বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশের কোনও জায়গা নির্বাচন করতে।” প্রশাসনের তরফে নতুন করে জমির খোঁজ শুরু হলেও বাস টার্মিনাস কত দিনে তৈরি হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে।