তেতে থাকা খড়ের বাড়ি পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছিল চোখের পলকে। মঙ্গলবার, সেই অগ্নিকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে গেল প্রশাসন।
সোমবার দুপুরে মহম্মদবাজারের কাপিষ্ঠা গ্রামের রায়পাড়ায় আগুনে পুড়ে যায় খড়ের ও টিনের ছাউনি দেওয়া প্রায় ২৫টি মাটির বাড়ি। আগুন লাগার কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা না কাটলেও অনেকের অনুমান, রান্নার উনুন থেকে বা শর্ট সার্কিট হয়ে আগুন লাগে। হঠাৎ আগুনের কারণে সর্বশান্ত হয়ে যায় পরিবারগুলি। আগুনে সব হারানোর পরে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি গৃহবধূ মনসা বাগদি। কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, ‘‘কী ভাবে সারা বছর চলবে? কোথায় থাকব এই গরমে?’’ একই প্রশ্ন ছিল অন্যদেরও।
খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিডিও তারাশঙ্কর ঘোষ ঘটনাস্থলে পৌঁছন। ত্রিপল, শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেন। পর দিন মঙ্গলবার সকালে বিডিও, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) এনাউর রহমান সদলবলে ওই গ্রামে গিয়ে ত্রাণের ব্যবস্থা করেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির অবশ্য অভিযোগ, ‘‘সময়ে দমকল এলে এত বড় ক্ষতি হত না। কাছাকাছি দমকল না থাকার জন্যই সর্বস্ব পুড়ে গেল।’’
তবে প্রশাসন দ্রুত তৎপর হওয়ায় এঁদের অনেকেই খুশি। প্রশাসনের তরফে এ দিন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জামা-কাপড়, ত্রিপল, সকালের টিফিন থেকে ভাত-ডাল, সব্জি, রাতের খাবারের পাশাপাশি গ্রামেরই একটি ট্রেনিং সেন্টারে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর শেখ, তরুণ দাসরা বলেন, ‘‘শুধু ব্যবস্থা করেছে বললে ভুল হবে। প্রশাসনের লোকজনই রান্না থেকে, খেতে দেওয়া সবই করছে।’’ প্রশাসনের তরফে বাড়ি করে দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
মাখন রায়, নারায়ণ রায়, দয়াল রায়, বলাই রায়, নরেশ রায়, পরেশ মাল, পাঁচকড়ি রায়, গোসাই রায়রা জানাচ্ছেন, সোমবারের ঘটনা এখনও চোখের সামনে ভাসছে। এ দিন এই এলাকায় প্রচারে গিয়ে দুর্গত লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন রামপুরহাটের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। আশিসবাবু বলেন, ‘‘এটা আমার নির্বাচনী এলাকা। এ দিন এ দিকে প্রচারে এসেছিলাম। কিন্তু, কিছু করার ইচ্ছে থাকলেও নির্বাচনী বিধির কারণে কিছু করতে পারলাম না।’’