বাউল অ্যাকাডেমির কাজ চলছে এখনও। নিজস্ব চিত্র।
কথা ছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই শেষ হবে জয়দেবে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের বাউল অ্যাকাডেমির কাজ। এক বছর পরে একুশের জানুয়ারিতেও সেই কাজ শেষ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। পুরোদমে কাজ চললেও লাগতে পারে কয়েক মাস। বরাদ্দ অর্থ ঠিক সময়ে না পৌঁছনোর জন্যই কাজের গতি ধীর হয়েছে বলে জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের অন্দরের খবর।
এই ব্যাপারে জেলাশাসক বিজয় ভারতীর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তবে প্রশাসনের একটা সূত্র বলছে, জয়দেবে মনের মানুষ আখড়ার কাছে সরকারি জমিতে তৈরি হওয়া বাউল অ্যাকাডেমির অনেক কাজ বাকি। জানা গিয়েছে, আট কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ হয় ওই কাজের জন্য। বীরভূম জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে জোরকদমেই এগোচ্ছিল কাজ। ২০১৯ সালের জুন, জুলাই থেকে অ্যাকাডেমি গড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা ঠিক মতো টাকা না পাওয়ার জন্য কাজের গতি কমায়। ফলে বছর শেষে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় এলেও বাউল অ্যাকাডেমির উদ্বোধন করতে পারবেন এমন সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে জয়দেবে বাউল অ্যাকাডেমির তৈরির ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর হাত ধরে অ্যাকাডেমির শিলান্যাস হয়েছিল পরের বছরের জানুয়ারিতেই। কাজ শুরু হয় সেই বছর। কিন্তু, কাজ কাঙ্খিত গতিতে এগোয়নি। বর্তমানে ভবনের কাঠামো ঢালাই হয়ে গেলেও বহু কাজ বাকি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাকাডেমি ভবন তৈরির দায়িত্বে রয়েছে বীরভূম জেলা পরিষদ নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা। তিন বছরে কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রশাসন সূত্রে খবর বাউল অ্যাকাডেমির জন্য বেশ কিছু পদও অনুমোদন পেয়েছে। কিন্তু, টাকা জোগানের দীর্ঘসূত্রিতাই ভবনের কাজ শেষ করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা গিয়েছে, এ পর্যন্ত ৬ কোটি টাকার কাজ করে ঠিকাদার পেয়েছেন ২ কোটি টাকা।
যদিও জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ বলছেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতির জন্য নয় মাস কাজ হয়নি। কাজ শেষ না করলে টাকার প্রশ্ন-ই আসে না।’’ অ্যাকাডেমির সভাপতি মিলনকান্তি বিশ্বাস বলছেন, ‘‘সপ্তাহ দুই আগেই কাজ দেখতে জয়দেব গিয়েছিলাম। এখনওর ৩০ শতাংশ বাকি। কাজ ত্বরান্বিত করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’’
এই বিষয়ে কিছুটা হলেও আক্ষেপ রয়েছে জেলার বাউলদের মধ্যে। তাঁরা বলছেন, ‘‘অ্যাকাডেমি তৈরি হলে খুব উপকার হয়। সময়ে কাজ শেষ হলে ভাল হত।’’