সমাবেশে ভাল সংখ্যায় উপস্থিতি ছিল মহিলাদের। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়
অ-আদিবাসীদের ‘জোরপূর্বক’ তফসিলি উপজাতির তালিকাভুক্ত করার প্রতিবাদে সোমবার খাতড়ায় সমাবেশ করল ‘আদিবাসী একতা মঞ্চ’। পরে, সংগঠনের তরফে মহকুমাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তার আগে মহকুমাশাসকের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি নেওয়ার ক্ষেত্রে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে সংগঠনের তরফে কিছু সময়ের জন্য খাতড়া-রানিবাঁধ রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়। মহকুমাশাসক (খাতড়া) নেহা বন্দ্যোপাধ্যায় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি গ্রহণ করলে অবরোধ ওঠে। মহকুমাশাসক তবে বলেন, "স্মারকলিপি নেওয়ার ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। কথা বলে বিষয়টি মিটেছে। অসহযোগিতার অভিযোগ ঠিক নয়।”
এ দিন সকাল থেকে ওই সমাবেশকে ঘিরে খাতড়া এটিম গ্রাউন্ডে ভিড় জমতে শুরু করে। এক সময়ে ভিড়ে কার্যত উপচে পড়ে এটিম গ্রাউন্ড। খাতড়া বাজারেও সমাবেশে আসা লোকজনের ব্যাপক ভিড় চোখে পড়েছে। সমাবেশ থেকে সংগঠনের নেতারা অ-আদিবাসীদের জোর করে তফসিলি উপজাতির তালিকাভুক্ত করার বিরুদ্ধে সরব হন। এমনটা হলে ‘প্রকৃত জনজাতি’ মানুষজনের ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা জানান তাঁরা।
সমাবেশ চলাকালীনই আদিবাসী একতা মঞ্চের প্রতিনিধিরা খাতড়া মহকুমাশাসকের অফিসে স্মারকলিপি দিতে যান। সংগঠনের নেতাদের অভিযোগ, মহকুমাশাসক প্রথমে স্মারকলিপি নিতে অসহযোগিতা করেন। এর পরে বিকেল ৩টে থেকে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে খাতড়া-রানিবাঁধ রাজ্য সড়কে অবরোধ করে আদিবাসী একতা মঞ্চ। পরে মহকুমাশাসক স্মারকলিপি নিতে সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডেকে পাঠালে অবরোধ ওঠে। মঞ্চের তরফে বিপ্লব সরেন বলেন, “মহকুমাশাসক প্রথমে স্মারকলিপি নেওয়ার ক্ষেত্রে অসহযোগিতা করেছিলেন। বাধ্য হয়ে অবরোধ করা হয়। উনি স্মারকলিপি নিতে রাজি হলে অবরোধ ওঠে।”
নিজেদের দাবির সমর্থনে বিপ্লব বলেন, “অ-আদিবাসীদের জোর করে তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দেওয়া হলে প্রকৃত আদিবাসীদের নানা সমস্যার মুখে পড়তে হবে। এর ফলে তাঁরা যেমন নানা ক্ষেত্রে বঞ্চিত হবেন, তেমনই নিজেদের সম্পদ হারানো এমনকি শোষণের মুখেও পড়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। তাই আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি।” এ দিনের সমাবেশ থেকে দেশ জুড়ে আদিবাসীদের উপরে হওয়া অত্যাচার বন্ধ, ভুয়ো তফসিলি জাতিগত শংসাপত্র প্রদান বন্ধ করা, ২০০৬-এর বনাধিকার আইন ও পঞ্চম তফসিলি লাগু করা-সহ নানা দাবি তোলা হয়।