লাগদা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
জ্বর ও সর্দি-কাশিতে ভোগা শিশুদের সন্ধানে নিচুতলায় সমীক্ষার কাজ শুরু করল পুরুলিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতর সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ব্লক থেকে জ্বর-সর্দি-কাশিতে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার খবরও আসা শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, এখনও জেলার অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত কোনও শিশুর সন্ধান মেলেনি। দফতরের এক আধিকারিক জানান, অ্যাডিনোভাইরাসে কোনও শিশু আক্রান্ত হয়েছে কিনা, তা জানতে পরীক্ষা হয় নাইসেড-এ। রাজ্যের তরফে নমুনা পাঠানোর নির্দেশ এখনও আসেনি। তবে কোনও ভাইরাসের প্রকোপে জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা বাড়ছে কিনা, তা জানতে নজরদারি শুরু হয়েছে। বাড়িবাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করছেন আশাকর্মী এবং নিচুতলার স্বাস্থ্যকর্মীরা। নবজাতক থেকে শুরু করে ১৬ বছর বয়সি কত জন বাড়িতে রয়েছে, তাদের কেউ জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছে কিনা, আক্রান্ত হলে চিকিৎসা চলছে কিনা, কোনও শিশু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে কিনা, ভর্তি থাকলে কোন হাসপাতালে এবং কত দিন ভর্তি রয়েছে— এ সব তথ্য সংগ্রহ করছেন তাঁরা। আক্রান্ত হলে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কুণালকান্তি দে বলেন, “এখন ঋতু পরিবর্তনের সময়। জ্বর-সর্দি-কাশিতে ভুগছে অনেক শিশু। নিচুতলায় প্রকৃত ছবি জানতেই এই সমীক্ষা। ব্লক ঘুরে সমীক্ষা রিপোর্ট আমাদের কাছে আসছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ওই সব উপসর্গ নিয়ে অনেক শিশু ভর্তি হচ্ছে। পুরুলিয়া মেডিক্যালের শিশু বিভাগে শয্যার সংখ্যা ৭৩। শনিবার পর্যন্ত সেখানে ভর্তি রয়েছে ১২০টি শিশু। তাদের মধ্যে এআরআই-এ (অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন) আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৯০। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ১৯ জন। রঘুনাথপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ছবিটাও প্রায় একই। সেখানে শিশু বিভাগে শয্যা রয়েছে ৩০টি। শনিবার পর্যন্ত ভর্তিহয়েছে ৩৮ জন শিশু। তাদের মধ্যে এআরআই-এ আক্রান্তের সংখ্যা ১৮। গত ২৪ ঘণ্টায় শিশু বিভাগে ভর্তি হয়েছে ন’জন।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই দুই হাসপাতালে শিশু বিভাগে কত জন ভর্তি রয়েছে, এআরআই উপসর্গ নিয়ে ভর্তির সংখ্যা কত এবং গত ২৪ ঘণ্টায় কত জন শিশু বিভাগে ভর্তি হয়েছে—সে সব পরিসংখ্যান প্রতিদিন রাজ্যকে জানাতে হচ্ছে। এর পাশাপাশি, গ্রামীণ হাসপাতাল বা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একই উপসর্গ নিয়ে কত জন শিশু ভর্তি রয়েছে, সে তথ্যও রাজ্যের কাছে প্রতিদিন যাচ্ছে।”