ধৃত: পুরুলিয়া আদালতে প্রতারণায় ধৃত সোমা। নিজস্ব চিত্র।
প্রতারণার অভিযোগে ধৃত অভিনেত্রী সোমা বাগকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হল। পুরুলিয়া সদর থানায় তাঁর বিরুদ্ধে রুজু থাকা একটি মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সোমাকে পুরুলিয়া আদালতে তোলা হয়। জেলার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘সোমার বিরুদ্ধে পুরুলিয়ায় দু’টি প্রতারণার মামলা রয়েছে। সেগুলিতে সোমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।’’
গত ৭ মে পুরুলিয়ার এক সিমেন্ট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কয়েক দফায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোমা বাগকে আজাদগড় এলাকার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ঘটনার পরেই পুরুলিয়ার দু’টি প্রতারণার মামলার কথা সামনে উঠে আসে। পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৮ মে পুরুলিয়া আদালতে সদর থানার একটি মামলার শুনানিতে সরকারি আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে সোমাকে ২৩ মে হাজির করানোর নির্দেশ হয়। কিন্তু ওই দিন তাঁকে হাজির করানো যায়নি।
মঙ্গলবার কলকাতার আলিপুর মহিলা সংশোধনাগার থেকে সোমাকে নিয়ে এসে পুরুলিয়া আদালতে হাজির করায় পুলিশ। পুরুলিয়া শহরের ওল্ড মানবাজার রোড এলাকার বাসিন্দা রুচিরা সুরেখার দায়ের করা মামলাতে তাঁকে আদালতে তোলা হয়। শহরের কাপড় ব্যবসায়ী রুচিরা গত বছরের ১৩ নভেম্বর পুরুলিয়া সদর থানায় সোমা বাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, সোমা ইটের ব্যবসায় লগ্নির নাম করে তাঁর থেকে কয়েক দফায় নগদে ও চেকে মোট ৪৮ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু নানা অজুহাতে সেই টাকা সোমা আর ফেরত দেননি। তার পরে পুরুলিয়া থেকে উধাও হয়ে যান। ফোন নম্বরও বদলে ফেলেন।
এ দিন সকাল থেকেই পুরুলিয়া আদালতে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত ছিল। পদস্থ পুলিশ আধিকারিক এবং পুরুলিয়া মহিলা থানা, পুরুলিয়া সদর, পুরুলিয়া মফস্সল, বলরামপুর, পাড়া থানা থেকে ওসি-দের নিয়ে আসা হয়েছিল। ছিলেন সিভিক ভল্যান্টিয়াররাও। আদালত চত্বরে উৎসাহী মানুষজন ভিড় করেছিলেন।
সোমার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন সুভাষ গড়াই ও বিশ্বরূপ পট্টনায়েক। সরকার পক্ষের আইনজীবী অরুণ মজুমদার ওই মামলায় পাঁচ দিন সোমাকে পুলিশি হেফাজতে রাখার জন্য বিচারকের কাছে আর্জি জানান। সোমার আইনজীবীরা এর বিরোধীতা করে দাবি করেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা মেনে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের আগে নোটিস দেওয়া হয়নি। টাকা নেওয়ার যে প্রমাণ সোমার বিরুদ্ধে দাখিল করা হয়েছে, তাতে তাঁর নাম বা সই কিছুই নেই বলে দাবি করেন তাঁরা। সওয়াল-জবাব চলাকালীন মহিলা পুলিশ কর্মীদের ঘেরাটোপে মাথা নীচু করে ভাবলেশহীন মুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন সোমা। দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক কুমকুম চট্টোপাধ্যায় সোমাকে তিন দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।