চালক বিদ্যুৎবরণ। মোটরবাইকে সওয়ার অনুব্রত। ফাইল চিত্র
গরু পাচার মামলায় সদ্যই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর নিজের ও ঘনিষ্ঠদের নামে প্রায় ১৭ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেই সূত্র ধরে সিবিআইয়ের আতসকাচের নীচে রয়েছেন তাঁর একাধিক ঘনিষ্ঠরা। তাঁদেরই এক জন বিদ্যুৎবরণ গায়েন বলে সূত্রের খবর। অনুব্রত ধরা পড়ার পর থেকেই এই বিদ্যুৎবরণের নাম ও সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে জোর চর্চা বোলপুরে।
কে এই বিদ্যুৎবরণ গায়েন?
বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কালিকাপুরের বাসিন্দা বিদ্যুৎ একটা সময়ে বোলপুর পুরসভার ময়লাফেলার গাড়ির খালাসি হিসেবে কাজ করতেন। ওই ওয়ার্ডেরই নিচুপট্টি এলাকার বাসিন্দা অনুব্রতের পরিবারের সঙ্গে ২০১১ সালের আগে থেকে তাঁর ঘনিষ্ঠতা। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই বিদ্যুতবরণের জীবনযাত্রা ‘বিদ্যুৎগতিতে’ বদলে গিয়েছে বলে এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন। ২০১১-’১২ অর্থবর্ষেই পুরসভায় বিদ্যুৎবরণের চাকরি পাকা হয়। অভিযোগ, যত দিন গড়িয়েছে তাঁর সম্পত্তিও উত্তরোত্তর বেড়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, কালিকাপুরে তাঁর তিনটি বাড়ি, একটি দামি গাড়ির পাশাপাশি রয়েছে আরও একাধিক সম্পত্তি ও জমি।
অনুব্রত তো বটেই, তাঁর মেয়ে সুকন্যার সঙ্গেও বিদ্যুৎবরণের ‘ঘনিষ্ঠতা’ ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে। বহু ছবিতে এক ফ্রেমে বিদ্যুৎ-সুকন্যাকে দেখা গিয়েছে। অনুব্রতের পরিবারের সঙ্গে বিদ্যুৎবরণের কতটা ‘নিবিড় সম্পর্ক, তা সুকন্যার ফেসবুক প্রোফাইলে একাধিক পোস্ট ও ছবি থেকেও পরিষ্কার হয়েছে অনেকের কাছে। এমনকি বিদ্যুৎবরণ অনেক সময় ভালবেসে অনুব্রতকে ‘বাবা’ ডাকতেন বলেও অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানা গিয়েছে।
সুকন্যার নামে দু’টি কোম্পানির হদিস পেয়েছে সিবিআই। সেই দু’টিতেই সুকন্যার পাশাপাশি যুগ্ম ডিরেক্টর হিসেবে রয়েছে বিদ্যুৎবরণের নাম। তাঁর সঙ্গে অনুব্রতের ঘনিষ্ঠতা কতটা, ব্যবসায়িক সম্পর্কই বা কী—এ সবই খতিয়ে দেখেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তবে, অনুব্রত ধরা পড়ার পর থেকেই বিদ্যুৎবরণ শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে শহরের বাইরে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তা সম্ভব হয়নি।