এসি খারাপ, মর্গের দুর্গন্ধে টেকাই দায়

বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে কয়েক দিন ধরে খারাপ হয়ে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র। অভিযোগ, এর ফলে মর্গে থাকা মৃতদেহগুলি পচে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। তাতে নাজেহাল হতে হচ্ছে হাসপাতালের রোগী থেকে শুরু করে তাঁদের পরিজন এবং স্বাস্থ্যকর্মী, সকলকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২০ ০৩:০৮
Share:

ক্ষোভ: হাসপাতালে জমায়েত বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে কয়েক দিন ধরে খারাপ হয়ে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র। অভিযোগ, এর ফলে মর্গে থাকা মৃতদেহগুলি পচে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। তাতে নাজেহাল হতে হচ্ছে হাসপাতালের রোগী থেকে শুরু করে তাঁদের পরিজন এবং স্বাস্থ্যকর্মী, সকলকেই।
বুধবার থেকেই দফায়-দফায় রোগীর আত্মীয়স্বজন ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের অসন্তোষের কথা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাতে থাকেন। কিন্তু, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত কোনও সুরাহা না হওয়ায় এ দিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন হাসপাতালে রোগীর পরিবার-পরিজনেরা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর আত্মীয় শেখ সাইফুদ্দিন, জাহানারা বিবিরা বলেন, ‘‘মৃতদেহগুলি থেকে এত দুর্গন্ধ বের হচ্ছে যে, কোনও ভাবেই হাসপাতালে থাকতে পারছি না। অথচ আমাদের রোগী ভর্তি আছে বলে এখানে থাকতেও হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না। আমরা চাই প্রশাসন অবিলম্বে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক।’’
ঘটনায় ক্ষুব্ধ চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নার্স জানান, এই দুর্গন্ধের মধ্যেই আমাদের লেবার ওয়ার্ডে কাজ করতে হচ্ছে। ওই ওয়ার্ড পুলিশ মর্গের পাশেই। আমরাও কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে এসি মেশিন সারানোর জন্য জানিয়েছি। কিন্তু, কোনও সুরাহা হয়নি।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো মর্গটিতে মৃতদেহ সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই বেশ কয়েক বছর আগে বোলপুর হাসপাতালের পুরনো ভবনের নীচের তলায় একটি ঘরকে ‘ডেড রুম’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় । ডেড রুমটি তৈরি করা হয়েছিল মূলত বোলপুর , নানুর ,লাভপুর,শান্তিনিকেতন, থানা এলাকা থেকে কোন মৃতদেহ সংরক্ষণের প্রয়োজন হলে তা রাখার জন্য। ‘ডেড রুমে’ মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য এসি মেশিন বসানো হয়। বর্তমানে ১৩টি পরিচয়হীন দেহ জমে রয়েছে। তাও আবার গত এক-দেড় বছর ধরে। এই বেওয়ারিশ দেহগুলি নিয়ে বারবার সমস্যায় পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দাবিদার না থাকায় এখনও পর্যন্ত সৎকারও করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এরই মধ্যে তিন দিন ধরে ওই ‘ডেড রুম’-এর এসি মেশিল বিকল হয়ে যাওয়ায় অবস্থা সাংঘাতিক হয়েছে।
বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভারপ্রাপ্ত সুপার দীপ্তেন্দু দত্ত জানান, ওই ঘরটি মৃতদেহে ভর্তি হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মৃতদেহগুলি এই স্থান থেকে সরানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। ‘‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রটি ঠিক করে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।’’—আশ্বাস দীপ্তেন্দুবাবুর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement