(বাঁ দিক থেকে) শুভঙ্কর ঘোষ ও রাজেশকুমার শা। —নিজস্ব চিত্র।
মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধান। তাতেই হাত ছাড়া হয়ে গেল ৫০ হাজার টাকা!
বুধবার জয়পুরের রাজগ্রাম থেকে বিষ্ণুপুর পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার মিনি ম্যারাথন দৌড়ে প্রথম হয়ে হাওড়ার আমতার ছেলে শুভঙ্কর ঘোষ পেলেন ১ লক্ষ টাকা। তিনি সময় নিয়েছেন এক ঘণ্টা পাঁচ মিনিট ৩১ সেকেন্ড। আর এক ঘণ্টা পাঁচ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করে দ্বিতীয় স্থান পাওয়া দার্জিলিংয়ের রাজেশকুমার শা পেলেন ৫০ হাজার টাকা।
সাংসদ সৌমিত্র খানের উদ্যোগে বিষ্ণুপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজিত ২১ কিলোমিটার মিনি ম্যারাথন হয়ে গেল। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা তো বটেই, ভিন্ রাজ্য থেকেও বহু তরুণ এসে দৌড়োলেন। প্রথম স্থান পাওয়া শুভঙ্কর ইস্টবেঙ্গলের অ্যাথলেট। দ্বিতীয় স্থান পাওয়া রাজেশকুমার শা শিলিগুড়ি কলেজের ছাত্র। তৃতীয় হয়েছেন জামসেদপুরের অর্জুন টুডু। তাঁর সময় লেগেছে এক ঘণ্টা ছয় মিনিট পাঁচ সেকেন্ড।
দৌড় প্রতিযোগিতা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রাজ্য ম্যারাথন রোড রেস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক হীরালাল মণ্ডল জানান, তিন জনেই ভাল দৌড়েছেন।
বিষ্ণুপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বরুণ দে বলেন, ‘‘প্রায় ১৫০০ প্রতিযোগী এই হাফ ম্যারাথনে যোগ দেন। দেশের উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, আসাম, গোয়া, বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ দেশের ন’টি রাজ্য থেকে প্রতিযোগীরা এসেছিলেন।’’ তিনি জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সব প্রতিযোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। এ দিন সকালে বাসে করে দৌড় শুরুর জায়গা, জয়পুর থানার রাজগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। ওই স্কুলের সামনে থেকে আরামবাগ–বিষ্ণুপুর রাস্তা ধরে ঠিক দৌড় শুরু হয়।
সূচনা করেন বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা, প্রাক্তন দৌড়বিদ বিমল মাহাতো। উপস্থিত ছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খান, বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তুষারকান্তি ভট্টাচার্য, পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা প্রমুখ। দৌড়বিদদের উৎসাহ দিতে সাধারণ মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
রাজগ্রাম, বাঘাজোল, সলদা, কুম্ভস্থল, জয়পুর, তাঁতিপুকুর, বাঁধগাবা হয়ে বিষ্ণুপুর শহরে রাস্তার দু’পাশে আট থেকে আশি— সকলেই ফুল আর জলের বোতল নিয়ে উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন তাঁদের।
ফিনিশিং পয়েন্টে দৌড়বিদদের উৎসাহ দিতে মাঠে গ্যালারি ভর্তি দর্শকদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান শ্যাম মুখোপাধ্যায় ও কাউন্সিলাররা।
সাংসদ বলেন, ‘‘ভালবাসার দিনে নতুন প্রজন্মকে মাঠমুখি করতেই আমাদের এই প্রয়াস।’’ তিনি জানান, প্রথম স্থানাধিকারীকে এক লক্ষ টাকা, দ্বিতীয় স্থানাধিকারীকে ৫০ হাজার টাকা, তৃতীয় স্থানাধিকারীকে ৩০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়। চতুর্থ স্থানাধিকারী থেকে ৫০ জনকে দেওয়া হয় ২০০০ টাকা।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিষ্ণুপুরের বিধায়ক বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুর মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার গ্যালারির ছাউনি লাগানো হবে বিধায়ক তহবিল থেকে। তা হবে বুধবারের ম্যারাথন বিজয়ী শুভঙ্কর ঘোষের নামে।’’ এ দিন বিষ্ণুপুর স্টেডিয়ামে নৈশ আলোর স্থায়ী বন্দোবস্তের সূচনা করেন ম্যারাথন বিজয়ী শুভঙ্কর ঘোষ।