নিজস্ব চিত্র।
ইংরেজি তো পড়াতেই পারেন না, জানেন না বাংলা বানানও। স্কুল পড়ুয়াদের বাবা-মায়েরা এমন অভিযোগ তোলায় বাঁকুড়ার ছুটিতে পাঠানো হল বাঁকুড়ার সেই প্রাথমিক শিক্ষককে। ওই শিক্ষকের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্কুলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন অভিভাবকেরা। তার পরেই তড়িঘড়ি ওই শিক্ষকের জায়গায় নিয়ে আসা হল নতুন এক জনকে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের নির্দেশে শনিবার বাঁকুড়ার চড়ুইকুড় প্রাথমিক স্কুলে যোগ দিলেন মিঠুন সাঁতরা নামে এক শিক্ষক।
সদ্য ছুটিতে যাওয়া ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে গত সোমবার ওন্দা ব্লকের চড়ুইকুড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। তাঁদের দাবি, বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের বাসিন্দা ওই শিক্ষক কাজে যোগ দেওয়ার পর শুরুতে তেমন কিছু মনে হয়নি। পরে দেখা যায়, ছেলেমেয়েরা পরীক্ষার খাতায় সঠিক উত্তর লিখলেও কেটে দিচ্ছেন তিনি। অভিযোগ, কিছু দিন পর থেকেই পড়ুয়ারা ওই শিক্ষকের নামে নালিশ করা শুরু করে। ছেলেমেয়েরাই বাবা-মায়েদের জানায়, ইংরেজি হোক বা বাংলা, দুটো ভাষার একটাও পড়াতে পারেন না তিনি। সম্প্রতি উচ্চমাধ্যমিকে পাশ করানোর দাবিতে অকৃতকার্য অনেক পড়ুয়া আন্দোলনে নামেন। সেই সময় এক ছাত্রী ইংরেজিতে একটি বানান ভুল বলায় নেটমাধ্যমে তুমুল কটাক্ষের শিকার হন। স্বপন পাল নামে ওন্দার এই স্কুলের অভিভাবক সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের আর দোষ কোথায়! শিক্ষক যদি এমন হন, পড়ুয়ারা আর শিখবে কোথা থেকে!’’
অভিভাবকদের অভিযোগ স্বীকারও করে নিয়েছিলেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তার পরেই ওই শিক্ষককে ছুটি পাঠানো হল। প্রধান শিক্ষক বলেন, “গ্রামবাসীরা ওই শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। ওই ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষক আর স্কুলে আসেননি। তিনি আর এই স্কুলে আসবেন কি না, তা আমার জানা নেই। আজ (শনিবার) মিঠুন সাঁতরা নামের এক জন শিক্ষক স্কুলে যোগ দিয়েছেন। আশা করি, এ বার স্কুলের পঠনপাঠন স্বাভাবিক ভাবে হবে।” চড়ুইকুড় গ্রামের বাসিন্দা স্বপন পাল বলেন, “ওই শিক্ষকের পড়ানোর ন্যূনতম যোগ্যতাও ছিল না। তাঁর হাতে আমাদের গ্রামের পড়ুয়াদের ভবিষ্যত অন্ধকার হয়ে যেত। তাই, ওই শিক্ষককের অপসারণের দাবিতে সরব হয়েছিলাম আমরা। আজ নতুন শিক্ষক স্কুলে যোগ দেওয়ায় গ্রামবাসীরা এখন স্বস্তিতে।’’