নিজস্ব চিত্র
জঙ্গলের বিষাক্ত কন্দ খেয়ে শবর সম্প্রদায়ের এক ব্যাক্তির মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল পুরুলিয়ায়। ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ হয়েছেন একই পরিবারের আরও চার জন। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়া জেলার পুঞ্চা ব্লকের নির্ভয়পুর গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত ব্যাক্তির নাম জলধর শবর (৬২)। অসুস্থ চার জনকে প্রথমে পুঞ্চা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও পরে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্ভয়পুর গ্রামের বাসিন্দা জলধর শবর বুধবার গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে গিয়ে মাটি খুঁড়ে বিশেষ এক ধরনের কন্দ বাড়িতে নিয়ে আসেন। শবর সম্প্রদায়ের মানুষেরা অনেকটা ওলের মতো দেখতে এই ধরনের কন্দ আলুর মতো সেদ্ধ করে ভাতের সঙ্গে খেতে অভ্যস্ত। বৃহস্পতিবার সকালে ওই কন্দ বাড়িতে সেদ্ধ করে পরিবারের অন্যান্যদের নিয়ে খান জলধর শবর। জানা গিয়েছে এই কন্দ খাওয়ার পর থেকেই জলধর শবর-সহ পরিবারের প্রায় সকলেই অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন। বমি করার পাশাপাশি মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ দেখা দেয় সকলের। বিষয়টি জানাজানি হতেই জলধর শবর-সহ ওই পরিবারের অন্য চারজন অসুস্থকে স্থানীয় পুঞ্চা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই জলধর শবরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ওই পরিবারের অন্য চার অসুস্থকে চিকিৎসার জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
অন্য দিকে ঘটনার কথা জানার পরই পুঞ্চা ব্লকের পুলিশ ও প্রশাসন হাজির হয় নির্ভয়পুর গ্রামে। গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি মৃত জলধর শবরের পরিবারের খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেগুলি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। পুঞ্চা ব্লকের বিডিও অনিন্দ্য ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পাওয়ার পরই আমি, পুঞ্চা থানার ওসি, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক, স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক ও উদ্যান পালন আধিকারিক একটি দল ওই গ্রামে যাওয়া হয়। জানা গিয়েছে জলধর শবরের পরিবারে খাবারের অভাব ছিল না। বাড়িতে যথেষ্ট চাল ও আলু মজুত রয়েছে। আমরা ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করেছি। জলধর শবরের মৃত্যুর সঠিক কারন জানতে মৃতদেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হচ্ছে।’’