আদালতের পথে প্রার্থনা কোলে। নিজস্ব চিত্র
বাড়িতে গৃহশিক্ষিকা হিসাবে পড়াতে ঢুকে গৃহস্থের আলমারি খুলে নগদ টাকা এবং গয়না লুঠ। পোশাক বদলানোর নাম করে দিনের পর দিন ওই ‘কীর্তি’ চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক গৃহশিক্ষিকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ধরা পড়ে যেতে হল তাঁকে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের ওই ঘটনায় পুলিশ প্রার্থনা কোলে নামের ওই গৃহশিক্ষিকাকে গ্রেফতার করেছে। তাঁর থেকে খোয়া যাওয়া টাকার একটা বড় অংশ এবং গয়নাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতকে বুধবার বিষ্ণুপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। আদালত তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
হুগলির পুড়শুড়ার বাসিন্দা প্রার্থনা কোলো পরিবেশবিদ্যায় স্নাতকোত্তর পড়া শেষ করে বিএড প্রশিক্ষণ নিয়ে বিষ্ণুপুরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে চাকরি পান। বছর দেড়েক ধরে তিনি বিষ্ণুপুরের ছিন্নমস্তা রোডের একটি বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকতেন। মাস তিনেক আগে বিষ্ণুপুরের শাঁখারি বাজার এলাকার ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে গৃহশিক্ষিকা হিসাবে পড়াতে শুরু করেন। ওই ছাত্রীকে পড়ানোর সময় মাঝে মাঝেই প্রার্থনা পোশাক বদলানোর কথা বলতেন। অভিযোগ, সেই অছিলায় ছাত্রীকে ঘরের বাইরে যেতে বলতেন। প্রথমে বিষয়টি ততটা আমল দেননি ছাত্রীর মা পাপিয়া পাল। কিন্তু বেশ কিছু দিন পর তিনি দেখেন, যে ঘরে প্রার্থনা গৃহশিক্ষকতা করেন সেখানে থাকা আলমারি থেকে নগদ ১ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা গায়েব হয়েছে। এমনকি আলমারিতে থাকা কিছু সোনার গয়না চুরি হয়েছে। এর পর তাঁরা প্রার্থনার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ নিয়ে বিষ্ণুপুর থানার দ্বারস্থ হন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে।
পাপিয়া বুধবার বলেন, ‘‘দরজা বন্ধ করে ঘরে ১০-১৫ মিনিট কাটাতেন প্রার্থনা। তাঁকে আমরা কখনও সন্দেহ করিনি। সর্ষের মধ্যেই যে ভূত লুকিয়ে আছে তা কখনও কল্পনা করিনি।’’ ভাইঝির গ্রেফতারের খবর পেয়ে বুধবারই হুগলি থেকে বিষ্ণুপুর আদালতে যান ধৃত শিক্ষিকার কাকা স্বপন কোলে। তিনি বলেন, ‘‘আমার ভাইঝি পড়াশোনায় ভাল। এমনটা সে করতে পারে এটা আমরা ভাবতেই পারছি না। এই অভিযোগের সত্যতা কতটা তা-ও জানি না।’’