নতুন স্কুলের জায়গা খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকেরা। মহম্মদবাজারের চাঁদা মৌজায়। নিজস্ব চিত্র।
ডেউচা-পাঁচামি প্রকল্প এলাকার মধ্যে রয়েছে মথুরাপাহাড়ি প্রাথমিক স্কুল। প্রকল্পের কাজ শুরু হলে সরাতে হবে স্কুলটিকে। বুধবার তাই পরিদর্শনে এসেছিলেন জেলা ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, স্কুলের নতুন ভবনের জন্য বিকল্প জায়গার পাশাপাশি বর্তমান পড়ুয়া ও শিক্ষকদের জন্য বিকল্প স্কুলের ব্যবস্থা নিয়েও কথা হয়েছে।
লোকসভা নির্বাচনের পরে মহম্মদবাজারের ডেউচা-পাঁচামি কয়লা শিল্পাঞ্চলের কাজে আবার গতি এসেছে। ধাপে ধাপে প্রকল্পের মধ্যে থাকা বাকি জমি রেজিস্ট্রি করা ও জমিদাতাদের চাকরি দেওয়া শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে এই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে থাকা রাজ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন নিগমের (পিডিসিএল)
চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিবি সালিম পাঁচামি এলাকার চাঁদা মৌজা পরিদর্শন করেন। তিনি এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িতে নিগম, জেলা ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। সূত্রের খবর, চাঁদা মৌজা থেকেই কাজ শুরু হবে। এই মৌজার অধিকাংশ জমির মালিকানা রাজ্য সরকারের। চাঁদা মৌজায় রয়েছে মথুরাপাহাড়ি প্রাথমিক স্কুল। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই স্কুলে বর্তমানে ৯৯ জন পড়ুয়া ও চার জন শিক্ষক রয়েছেন। পড়ুয়াদের মধ্যে ৫৩ জনের বাড়ি চাঁদা গ্রামে। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, তাদের অস্থায়ী ভাবে গ্রাম থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে সাগরবাঁধি প্রাইমারি স্কুলে পাঠানো হবে। বাকি ৪৬ জনের বাড়ি মথুরাপাহাড়ি গ্রামে। তাদের গ্রাম থেকে ১.২ কিলোমিটারের মধ্যে সোঁতসাল ফকিরপুর প্রাইমারি স্কুলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। স্কুলের চার জন শিক্ষকের মধ্যে তিন জনকে সাগরবাঁধি প্রাইমারি স্কুলে এবং বাকি এক জনকে সোঁতসাল ফকিরপুর প্রাইমারি স্কুলে পাঠানোর ভাবনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নতুন জায়গায় মথুরাপাহাড়ি প্রাইমারি স্কুলটিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। চাঁদা মৌজায় ১২৭২ নম্বর দাগের একটি সরকারি জায়গা স্কুলের নতুন ভবনের জন্য প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রকল্প এলাকায় প্রাথমিক স্কুলটি পড়ছে। তাই নতুন স্কুল বাড়ি তৈরি করা হবে। সব দিক বিবেচনা করে জায়গা ঠিক করা হচ্ছে।’’
মথুরাপাহাড়ি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নবীনচন্দ্র লেট বলেন, ‘‘একটা স্কুল হঠাৎ করে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হলে ছাত্র-ছাত্রীদের একটু সমস্যা হবে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করব, যাতে নতুন স্কুলটি গড়ে তোলার কাজ দ্রুত শেষ হয় সে দিকে নজর দেওয়ায়।’’ চাঁদা গ্রামের দুই পড়ুয়া শিবানী মুর্মু ও নন্দিনী বিস্তার জানায়, গ্রাম থেকে মথুরাপাহাড়ি স্কুল একটু দূরে ছিল। এ বার গ্রামের পাশেই নতুন স্কুল হবে। সেটা সুবিধা হবে। ফলে, তারা খুশি। খুশি অভিভাবকেরাও। অভিভাবক রঞ্জিত বিত্তার ও শুরুমনি মুর্মু জানান, সরকার যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তাতে তাঁরা খুশি। তাঁরা চান এলাকায় শিল্প হোক ও কর্মসংস্থান হোক।
মহম্মদবাজার নতুন চক্রের স্কুল পরিদর্শক বিপ্লবকুমার নন্দী বলেন, ‘‘প্রাথমিক শিক্ষক সেলের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক গতকালই চিঠি দিয়েছেন। আমরা সে মতো আজ, বৃহস্পতিবার, ওই তিনটি স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে বসব। আলোচনার জন্য অভিভাবকদের চিঠি দেব। আপাতত আশপাশের স্কুলে অস্থায়ী ভাবে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নতুন স্কুলের কাজ শেষ হলে, আবার সকলে সেই স্কুলে ফিরে আসবে। সমস্তটাই আলোচনায় ঠিক হবে।’’