—প্রতীকী চিত্র।
মোটরবাইকে বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ধনঞ্জয় গরাঁই শালতোড়ার আদুড়ি গ্রামের বাসিন্দা। ধনঞ্জয় পেশায় আনাজ চাষি হলেও আগে এলাকায় একটি ছোটমাপের ইটভাটা চালাত বলে পুলিশের দাবি। ধৃতকে বুধবার বাঁকুড়া আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, “বিস্ফোরণের ঘটনায় তদন্ত করে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনাটির সব রকম দিক তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন তথ্য জানার চেষ্টা করা হবে।’’
শুক্রবার রাতে ছাতনা-শালতোড়া রাস্তায় শালতোড়ার লাউপাহাড়ি এলাকায় একটি মোটরবাইকে বিস্ফোরণ হয়। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় মোটরবাইক চালক শালতোড়ার ঝনকার বাসিন্দা জয়দেব মণ্ডলের (৫৩)। ওই মোটরবাইকে শালতোড়ার অবৈধ পাথর খাদানে বিস্ফোরণের জন্য বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে অভিযোগ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঘটনায় এনআইএ তদন্তও দাবি করেন তিনি।
পুলিশও তদন্ত করে জানায়, জয়দেবের মোটরবাইকে বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তাতেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। মৃতের বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে বিস্ফোরক পরিবহণের স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ঠিক কী ধরনের বিস্ফোরক নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তা নিশ্চিত হতে ফরেন্সিক তদন্তের আবেদন করেছে পুলিশ। যদিও বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ফরেন্সিক তদন্তকারীরা আসেননি। এ দিকে তদন্তে নেমে জয়দেবের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখে তথ্য জোগাড় শুরু করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে বাড়ি থেকে ধনঞ্জয়কে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ধনঞ্জয়ের কাছ থেকেই জয়দেব সে দিন বিস্ফোরক নিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। জয়দেবের সঙ্গে ধনঞ্জয় অবৈধ বিস্ফোরকের কোনও সিন্ডিকেট চালাত কি না, কোথা থেকে কী ভাবে বিস্ফোরক আমদানি করত তারা, কোথায় বিক্রি করা হত— এ সব তথ্য জানতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ দিকে ওই বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকেই শালতোড়ায় অবৈধ ভাবে পাথর খাদান চালু হয়েছে কি না তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল বলেন, “শালতোড়ার আর্থ-সামাজিক অবস্থা অনেকাংশে পাথর ব্যবসার উপরে নির্ভরশীল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি তুলে আসছি বৈধ প্রক্রিয়ায় ছাড়পত্র দিয়ে শালতোড়ায় পাথর ব্যবসা চালু করা হোক। কিন্তু তৃণমূল পরিচালিত সরকার তা করছে না। উল্টে অবৈধ ভাবে কাজ চালানো হচ্ছে।” বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর পাল্টা দাবি, “অবৈধ কাজ চলছে না। কেন্দ্রীয় সরকারই শালতোড়ার পাথর ব্যবসায়ীদের ছাড়পত্র আটকে রেখেছে। বিজেপি ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে।”