পাইকড় থানার উত্তর রামচন্দ্রপুর গ্রামে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি ভাঙচুর। নিজস্ব চিত্র।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে হামলা ও দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল পাইকর থানার উত্তর রামচন্দ্রপুর গ্রামে। সোমবার দুপুরে ওই ঘটনায় সাত-আট জন তৃণমূল কর্মী জখম হয়েছেন। তৃণমূল সূত্রে খবর, তাঁদের মধ্যে কালু শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মীর জখম গুরুতর থাকায় তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরও তিন জন তৃণমূল কর্মীকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে সোমবার দুপুরে তাঁদের হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম আবু বক্কর।
মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতির অধীন নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত উত্তর রামচন্দ্রপুর গ্রাম। স্থানীয় সূত্রে খবর, ২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেখান থেকে নির্বাচিত হন কংগ্রেসের খোস মহম্মদ। তবে নির্বাচনের পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে উত্তর রামচন্দ্রপুর গ্রামে সিপিএম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মিল্টন রশিদ তৃণমূলের প্রার্থী শতাব্দী রায়ের থেকে ২৭৮টি ভোটটি পিছিয়ে গিয়েছেন। এর পরেই ঝামেলা শুরু হয় বলে অভিযোগ।
খোসের অভিযোগ, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে হারের পরে এলাকার কংগ্রেস কর্মীরা আমার সঙ্গে ঝামেলা পাকানোর চেষ্টা করছেন। রবিবার দুপুরে আমার অনুপস্থিতিতে মত্ত অবস্থায় আসরাফুল শেখ-সহ আরও তিন জন কংগ্রেস কর্মী আমার বাড়িতে হামলা চালান। আমার স্ত্রী ও মেয়েকে মারধর করেন। আমার মুদিখানার দোকানেও ভাঙচুর করা হয়। দোকানে থাকা কম্পিউটার, প্রিন্টার ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রতিবাদ করলেআমার প্রতিবেশী কালু শেখেরমাথায় বাঁশ ও ইট দিয়ে আঘাত করেছে। গুরুতর জখম কালুকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’
অন্য দিকে, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়া আসরাফুল শেখ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে আমরা কংগ্রেসে ছিলাম। এখন তৃণমূল করি। লোকসভা নির্বাচনের সময়ে আমি গ্রামের বাইরে ছিলাম। কুরবানির ইদে ঘরে ফিরেছি।’’ আসরাফুলের দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে আমাদের কোনও ঝগড়া হয়নি। লোকসভা ভোটে আমরা নাকি কংগ্রেসের হয়ে ভোট করেছি, এই সন্দেহে পঞ্চায়েত সদস্য দাঁড়িয়ে থেকে লোক লাগিয়ে আমাদের মারধর করিয়েছেন।’’
নন্দীগ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি চৈতন্য ভাস্কর বলেন, ‘‘উত্তর রামচন্দ্রপুর গ্রামে পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁরাও আমাদের দলের লোক। তবে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা নয়। পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে।’’ তৃণমূলের মুরারই ২ ব্লক সভাপতি আফতাবউদ্দিন মল্লিক বলেন, ‘‘আমি মুম্বইয়ে আছি। যতটুকু শুনেছি, নিজেদের মধ্যে ছোটোখাটো বিবাদ থেকে বড় ঘটনা ঘটে গিয়েছে। অঞ্চল সভাপতি বিষয়টি দেখছেন।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, মারধরের ঘটনায় একটা অভিযোগ হয়েছে এবং এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।