মঙ্গলবার সকালে ছাতিমতলায় উপাসনা। ছবি: বিশ্বজিৎ
পৌষমেলায় দূষণ রোধে সম্প্রতি কড়া নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। পৌষমেলায় দূষণ হচ্ছে কিনা, দেখার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র, প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়প্রকাশ মিত্র এবং পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তকে।
মঙ্গলবার বিকেলে মেলামাঠে হাজির হয় চার জনের একটি প্রতিনিধি দল। তাতে কল্যাণ রুদ্র ছাড়াও ছিলেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত ঘোষ, সুভাষ দত্ত এবং পর্ষদের দুর্গাপুর ডিভিশনের ইনচার্জ অরূপ দে। তাঁরা দীর্ঘক্ষণ মেলা পরিদর্শন করেন। সেখানেই তাঁদের নজরে আসে দূষণ বিধি লঙ্ঘনের দৃশ্য। তাঁরা কোথাও দেখলেন, মেলার মাঠে উনুন জ্বলতে, কোথাও নজরে এল উনুন-সহ কাঠ কয়লা মজুত করে রাখা বেশ কিছু স্টলের পিছন দিকে। মাঠে উনুন জ্বলতে দেখে জল দিয়ে তা নিভিয়েও দেন সুভাষবাবু। একই সঙ্গে যাঁরা কাঠ ও কয়লা মজুত করে রেখেছিলেন, তাঁদের মেলা প্রাঙ্গণ থেকে সে-সব সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় ওই প্রতিনিধিদল।
কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘পৌষমেলা নিয়ে দিন কয়েক আগে মুখ্যসচিব বৈঠক করেছিলেন। সেখানে মেলার দূষণ আটকানোর জন্য নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়।’’ তিনি জানান, বৈঠকে বলা হয় মেলায় যে বর্জ্য তৈরি হবে, তার প্রকৃত ব্যবস্থাপনা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নিতে হবে, মেলায় ধুলো ওড়া ঠেকাতে মাঠ ও পাশের রাস্তায় জল দিতে হবে, কাঠ, কয়লা, উনুন যাতে না জ্বলে নজর রাখতে হবে, পর্যাপ্ত পরিমাণে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করতে হবে, প্লাস্টিক-থার্মোকলের ব্যবহার করা যাবে না এবং নির্দিষ্ট সময়ে মেলা বন্ধ
করতে হবে। এ ছাড়াও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফ থেকে বায়ু ও শব্দ দূষণ পরিমাপ করার জন্য চারটি জায়গায় মনিটরিং মেশিন বসানোর সিদ্ধান্ত হয়।
সুভাষবাবুর জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরের পৌষমেলায় কয়লা ও কাঠের ব্যবহার অন্তত ৮০ শতাংশ কমেছে। কিন্তু, বায়ো টয়লেটের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম এবং তার পরিকাঠামোর বেশ খানিকটা ঘাটতি রয়েছে। পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে মেলা শেষে এই কমিটি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে রিপোর্ট জমা দেবে বলেও সুভাষবাবু জানান। পৌষমেলা কমিটির অন্যতম সদস্য কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পরিবেশ আদালতের নির্দেশিকা মেনে আমরা মেলা পরিবেশ বান্ধব করার যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’’