রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের ধারে একটি বেসরকারি স্কুলে তিন তলা ছাদ থেকে পড়ে যায়। তাকে কলকাতা স্থান্তরিত করা হয়। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হল দশ বছরের এক ছাত্রী। বুধবার দুপুরে রামপুরহাট থানা এলাকার অধীন ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি বেসরকারি স্কুলে ওই ঘটনায় জখম হওয়া ছাত্রীর নাম নাইরা সাউ। চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে সন্ধ্যায় কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয়।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, নাইরার বাড়ি নলহাটি পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে। প্রথমে তাকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখান থেকে সন্ধ্যায় কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। মেডিক্যাল সূত্রে খবর, মুখে আঘাত থাকায় তাকে চিকিৎসার জন্য কলকাতা নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুরে টিফিনের সময় ঘটনাটি ঘটে। তিন তলার বারান্দায় খেলার সময় পা হড়কে বারান্দার কাচ ভেঙে নীচে পড়ে যায় নাইরা। বারান্দায় কোনও রেলিং ছিল না। স্কুলের অ্যাকাডেমিক কো-অর্ডিনেটর দিব্যেন্দু সমাদ্দার বলেন, ‘‘খেলতে খেলতে আচমকা ছাত্রীটি করিডরের কাচ ভেঙে তিন তলা থেকে নীচের তলায় পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’’
কয়েক মাস আগে কলকাতার কসবায় একটি বেসরকারি স্কুলের পাঁচ তলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল এক ছাত্রের। দশম শ্রেণির ওই ছাত্রের মৃত্যুর পর নানা প্রশ্ন উঠেছিল। দুপুরে ওই ছাত্রকে গুরুতর আহত অবস্থায় নিকটবর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে ছাত্রটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেছিলেন চিকিৎসকেরা। ওই ঘটনায় স্কুলের মধ্যে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা ও তাদের উপর নজর রাখা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছিল। রামপুরহাটের ঘটনাতেও একই প্রশ্ন উঠেছে।
এ দিন দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রামপুরহাট, নলহাটি-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ওই স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা উপস্থিত হন। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা।
অভিভাবকদের অভিযোগ, পাঁচ মাস ধরে স্কুলে কোনও অধ্যক্ষ নেই। দীর্ঘদিন স্কুলের বারান্দা নাটবল্টু দিয়ে আটকানো কাচ দিয়ে ঘেরা। তা নিয়ে ক্ষোভ জানান অভিভাবকেরা। তাঁদের দাবি, অভিভাবকদের বৈঠকে বারান্দায় কাচের পরিবর্তে লোহার রেলিং দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষ সে কথা কানে তোলেননি বলে অভিযোগ। সে জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিভাবকদের ক্ষোভ। নাইরার মুখের আঘাত গুরুতর বলে জানিয়েছেন তার বাবা সঞ্জীব সাউ।