এলাহি আয়োজন। নিজস্ব চিত্র
কাকভোরে, ঠিক সাড়ে চারটায় শুরু হয় মঙ্গলারতি। রথযাত্রা থেকে এই প্রথা চলতে থাকে টানা আট দিন, উল্টোরথ পর্যন্ত। তবে, পুরুলিয়ার হুড়ার জগন্নাথ দেবের মন্দিরে রথযাত্রাকালীন ভোগ-পর্বই আকর্ষণের কেন্দ্রে। বাল্যভোগ, জলখাবারের পাশাপাশি, ৫৬ ভোগ সহকারে আয়োজন করা হয় জগন্নাথদেবের মধ্যাহ্নভোজ।
মন্দিরের পূজারি অচ্যুত রাজাগোপাল দাস জানাচ্ছিলেন, ক্ষীর, রসগোল্লা, আম, খেজুর ও কাজু দিয়ে সাজানো হয় বাল্যভোগ। সকাল সাড়ে ৮টায় থাকে জলখাবারের আয়োজন। অর্ঘ্যে দেওয়া হয় লুচি-তরকারি, মিষ্টি, কাঁঠাল, পায়েস ও লস্যি।
তবে মূল আকর্ষণ মধ্যাহ্নভোজ বা ‘রাজভোগ’। দ্বিপ্রহরে নির্ঘণ্ট মেনে তা সাজানো হয় স্যালাড, দই, গোবিন্দভোগ চালের ভাত, ডাল, রাজমা, লুচি, দই-বড়া, দই-ভাত, হালুয়া-সহ নানা মিষ্টি দিয়ে। থাকে, নানা ধরনের তরকারি, চাটনি, পাঁপড় থেকে ফলও।
রথযাত্রা কমিটির সম্পাদক গৌতম কুণ্ডুর কথায়, “জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা উল্টোরথ পর্যন্ত মাসির বাড়িতে কাটান। মামাবাড়ির মতো মাসির বাড়িও আদর পাওয়ার জায়গা। দিন আটেক তাই এ ভাবে ৫৬ ভোগের আয়োজন থাকে।” কমিটির অন্যতম সদস্য শ্যামাপদ দত্তের কথায়, “দিনভর ভোগ রান্না চলে। ইসকন মন্দির থেকে শুধু রান্নার জন্যই পাচকেরা উল্টোরথ পর্যন্ত এখানে থাকেন। বিকেল ও সান্ধ্যভোগেরও আয়োজন থাকে।” আট দিন ধরে এলাকার মানুষজন প্রসাদ পান, জানান কমিটির আর এক সদস্য নৃপেন্দ্রনাথ কর।
সম্পাদক জানান, প্রথা মেনে বাঁকুড়ার ঝাঁটিপাহাড়ির জগন্নাথ মন্দির থেকে নিম কাঠের তৈরি বিগ্রহগুলি রথযাত্রার দিন হুড়ায় আনা হয়। উল্টোরথের পরের দিন আরাধ্য ফের ঝাঁটিপাহাড়িতে ফেরেন। তাঁর কথায়, “হুড়ায় জগন্নাথদেবের মন্দির নির্মাণের কাজ চলছে। কাজ মিটলে এখানে দেবতা পাকাপাকি ভাবে অধিষ্ঠিত হবেন।”