ছবি পিটিআই
ঔরৈয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের উত্তরপ্রদেশে বাস দুর্ঘটনায় জখম হলেন পুরুলিয়ার ২২ জন পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁরা রাজস্থান থেকে পুরুলিয়ার গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। তাঁদেরই কয়েকজন জানান, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ উত্তরপ্রদেশের কানপুর-ইলাহাবাদ সড়কে, ইলাহাবাদের কাছে। আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ নিয়ে যায় হাসপাতালে। পুরুলিয়ার দু’জন ও ঝাড়খণ্ডের এক জনের চোট গুরুতর বলে দাবি করেছেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত শ্রমিকদের কয়েক জন।
ওই শ্রমিকেরা জানান, ‘লকডাউন’-এ ট্রেন না পেয়ে রাজস্থানের অজমেঢ় থেকে একটি বাস ভাড়া করে পুরুলিয়ায় ফিরছিলেন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন ঝাড়খণ্ডের কয়েকজন শ্রমিকও।
পুরুলিয়ার জয়পুর ব্লকের শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা মদন মাহাতো শনিবার ফোনে বলেন, ‘‘আমরা রাজস্থানের আজমের জেলার কিষণগড়ে পাথর কাটার কারখানায় কাজ করতাম। লকডাউনে সব বন্ধ। বাড়ি ফেরার উপায় পাচ্ছিলাম না।’’ তিনি জানান, এ রাজ্য এবং ঝাড়খণ্ডের কয়েকজন মিলে একটি বাস ভাড়া করেন। ঠিক হয়, জন প্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে দিতে হবে। পথে কানপুর-ইলাহাবাদ সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাসটি।
মদন বলেন, ‘‘আমরা বাসের ভিতরে ঘুমোচ্ছিলাম। আচমকা ভয়ানক ঝাঁকুনিতে ঘুম ভেঙে যায়। বুঝতে পারি, বাস উল্টে গিয়েছে।’’ মদন জানান, তাঁর চোট লেগেছে। তবে তাঁর কাকা অরুণ মাহাতোর বুকে চোট রয়েছে। মদন বলেন, ‘‘কাকা-সহ দুই আহতকে নিয়ে আমরা অ্যাম্বুল্যান্সে পুরুলিয়া রওনা হচ্ছি। বাকি যাত্রীরা বাসেই ফিরবেন।’’
পুরুলিয়া ১ ব্লকের গাড়াফুসড় গ্রামের বাসিন্দা দীপক মাহাতোও ছিলেন বাসটিতে। ফোনে তিনি বলেন, ‘‘বাসের সামনের চাকার রড ভেঙেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হয়। বরাত জোরে বেঁচে গিয়েছি। বাসের গতি বেশি থাকলে, বড় অঘটন হয়ে যেতে পারত।’’
শনিবার সকালে দুর্ঘটনার খবর জেলায় পৌঁছয়। পুরুলিয়ার জয়পুরের তৃণমূল নেতা কীর্তন মাহাতো বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার খবরেই সকালে ঘুম ভেঙেছে। রাজস্থান থেকে একটি বাস ভাড়া করে পরিযায়ী শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরছিলেন। বাসের বেশির ভাগই জয়পুর ব্লকের যাত্রী ছিলেন। সকালে উত্তরপ্রদেশ থেকে ফোন করে শ্রমিকেরাই দুর্ঘটনার খবর জানান।’’ রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘বাসে থাকা শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, কয়েক জনের আঘাত গুরুতর। যদি জেলায় নিয়ে আসা হয়, তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।’’