তৃণমূল নেতা অনিল মাহাতো খুনে অভিযুক্ত আরও দুই দলীয় কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত চিন্ময় রথ ও প্রদীপ দত্ত সদ্য প্রাক্তন রাইপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি জগবন্ধু মাহাতোর গোষ্ঠীর লোক হিসেবেই পরিচিত। নিহত অনিলবাবুর স্ত্রী সুলেখা মাহাতোর দায়ের করা এফআইআরে এই দু’জনের নাম ছিল। এ দিন ধৃতদের খাতড়া আদালতে তোলা হলে চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এই দু’জনকে নিয়ে অনিল-খুনে অভিযুক্ত সাত জনকেই দফায় দফায় গ্রেফতার করল পুলিশ।
গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে রাইপুরের মাটগোদায় তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে তিন আততায়ীর ছোড়া গুলিতে নিহত হন রাইপুর ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অনিলবাবু। এই খুনের ঘটনায় প্রথম থেকেই অনিলবাবুর অনুগামীরা তাঁর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা জগবন্ধুবাবুর গোষ্ঠীর লোকজনদের দায়ী করছিলেন। অনিলবাবুর স্ত্রী এফআইআরে যে সাত জনের নাম দিয়েছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই জগবন্ধুবাবুর অনুগামী হিসেবে পরিচিত। অভিযুক্তদের মধ্যে আগেই ধরা পড়েছেন রাইপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শান্তিনাথ মণ্ডল, পঞ্চায়েত সমিতির বনভূমি কর্মাধ্যক্ষ অসিতবরণ মাহাতো, শ্যামসুন্দরপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ভাস্করচন্দ্র মাহাতো এবং তৃণমূল কর্মী চন্দন নন্দী ও মলয় দাস চক্রবর্তী।
পুলিশেরই একটি সূত্রে খবর ছড়ায়, অনিলবাবুর খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শনিবার ঝাড়খণ্ড থেকে তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। যদিও এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেননি জেলার পুলিশ কর্তারা। জেলা পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “এফআইআরে নাম থাকা আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’ প্রথমে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করায় তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছিল অনিলবাবুর অনুগামীদের মধ্যে। তবে একে একে অভিযুক্ত সকলকেই পুলিশ ধরায় অনিলবাবুর গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ কিছুটা কমেছে। সদ্য রাইপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া সুলেখাদেবী এ দিন বলেন, “পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। পুলিশের তদন্তের উপরে আমরা আস্থা ফিরে পেয়েছি। তবে আমরা এই খুনের ঘটনার রহস্য জানতে চাই।’’ তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ধৃতদের জেরা করে খুনের প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।