পতাকা হস্তান্তর। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলে যোগ দিলেন বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির আরও দুই বিজেপি সদস্য। বলরামপুরের ঘাটবেড়া-কেরোয়া এলাকা থেকে বিজেপির টিকিটে নির্বাচিত হয়েছিলেন মালতী রাজোয়াড় ও শম্ভু সিংসর্দার। বুধবার রাতে পুরুলিয়া শহরে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে এসে তাঁরা শাসকদলে যোগদানের কথা ঘোষণা করেন।
এই দলবদলে পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষমতার পরিবর্তন অবশ্য হয়নি। পঞ্চায়েত সমিতির ন’জন বিজেপি সদস্য আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তার ফলে ২০ আসনের সমিতিতে তৃণমূলের আসন সংখ্যা হয়েছিল ১২। মালতীদেবী এবং শম্ভুবাবু তৃণমূলে যোগদান করার সমিতিতে রাজ্যের শাসকদলের আসন বেড়ে হল ১৪।
দলবদলের কারণ জানতে চাইলে শম্ভুবাবু বলেন, ‘‘বিজেপিতে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলাম না। এলাকার মানুষ নির্বাচিত করেছেন। তাই তাঁদের জন্য কাজ করতে চাই। তা ছাড়া, দলেও গুরুত্ব পাচ্ছিলাম না।’’ তৃণমূল কার্যালয়ে তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের শরিক হতেই ওঁরা আমাদের দলে যোগ দেন। বুঝতে পেরেছিলেন, বিজেপিতে থেকে এলাকার জন্য কাজ করতে পারবেন না।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী অবশ্য অভিযোগ করেন, ভয় দেখিয়ে বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। মালতীদেবী এবং শম্ভুবাবুর দলবদল সম্পর্কে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেউই নিজের ইচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন না। ভয় দেখিয়ে, চাপ দিয়ে, তাঁদের দলবদল করানো হচ্ছে। শাসকদল গণতন্ত্রকে নষ্ট করছে।’’ যদিও এই অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন শান্তিরামবাবু।
গত পঞ্চায়েত ভোটে বলরামপুর পঞ্চায়েত সমিতির ২০টি আসনের মধ্যে ১৭টি দখল করেছিল বিজেপি। তিনটি আসনে জেতে তৃণমূল। তার পরে নানা টালবাহানায় আটকে থাকে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া। বিজেপির তরফে অভিযোগ তোলা হয়, তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করায় বোর্ড গঠন করছে না প্রশাসন। যদিও প্রশাসনের বক্তব্য ছিল, নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া চালু করা যাচ্ছে না। এই চাপানউতোর চলাকালীন পঞ্চায়েত ভোটের তিন-চার মাসের মধ্যেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন সমিতির এক বিজেপি সদস্য। তারপর সমিতির আরও আট বিজেপি সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় সমিতিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় তৃণমূল।