Arrest

দম্পতি খুনের কিনারা, ধৃত নিহত মহিলার দাদা 

জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘দম্পতি খুনের ঘটনায় এক নিকট আত্মীয়-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

লাভপুর শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২০ ০১:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

মাথা থেঁতলে খুন করা হয়েছিল লাভপুরের চট্টোপাধ্যায় দম্পতিকে। ঘটনার ৪৫ দিনের মাথায় ওই দম্পতির পারলৌকিক কাজের দিনই খুনের কিনারা করল পুলিশ। ঘটনার মূল চক্রীকেও গ্রেফতার করা গিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। পুলিশ জানায়, দিন সাতেক আগে দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে গ্রেফতারও করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, ওই দু’জনকে জেরা করে তাঁরা জেনেছেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে লাভপুরের ব্রাহ্মণপাড়ায় নিজের বাড়িতে পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী স্বপ্নাদেবীর খুনের ঘটনায় স্বপ্নাদেবীর দাদা মুকুল মুখোপাধ্যায়ই প্রধান ষড়যন্ত্রকারী!

Advertisement

জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘দম্পতি খুনের ঘটনায় এক নিকট আত্মীয়-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘তথ্য, প্রমাণ সংগ্রহ করে শুক্রবার রাত একটা নাগাদ পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থেকে মুকুল মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা হয়। আমরা সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের আর্জি করেছিলাম। আদালত তা মঞ্জুর করেছে।’’

শনিবার মুকুল মুখোপাধ্যায়, সোমনাথ মণ্ডল এবং দেবনাথ কোনাই নামে তিন অভিযুক্তকেই বোলপুর আদালতে তোলা হয়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান ছিল, চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে চুরি করতে এসেছিল দুষ্কৃতীরা কিন্তু দম্পতি জেগে যাওয়ায় অথবা চিনতে পেরে যাওয়ায় ভারী কিছু দিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয়। আঘাত করার অস্ত্রের হদিশ অবশ্য পুলিশ পায়নি। বিশেষ কোনও কিছু চুরি হয়েছে এমনটাও অভিযোগ ছিল না। এমনকি পুলিশ কুকুর এনেও কিনারা হয়নি প্রথমে। একের পর এক বাড়ির পরিচারিকা থেকে রাঁধুনি, যাঁরা নিয়মিত ওই বাড়িতে যাতায়াত করতেন এমন কয়েকজনকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এর মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা সোমনাথ মণ্ডল ও দেবনাথ কোনাই-এর কথা এবং আচরণ দেখে সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, মুখোমুখি ও আলাদা করে জেরার পরেই কার্যত ভেঙে পড়েন দু’জনেই। তাঁরাই পুলিশকে জানান, সম্পত্তির ভাগ না পাওয়ায় বোন ও ভগ্নীপতিকে খুনের ছক কষেছিলেন মুকুলবাবু। ব্রাহ্মণপাড়ায় স্বপ্নাদেবীর পৈতৃক সূত্রে পাওয়া বাড়িটি ছাড়াও বেশ কিছু সম্পত্তি আছে। মুকুলবাবুকে এসবের ভাগ দিতে চাননি তাঁদের বাবা। এ নিয়ে পুরনো অশান্তি ছিল। ভোগদখল করতে না পারায় আক্রোশ থেকেই ভাড়াটে খুনিকে দিয়ে খুন করানো হয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। সোমনাথ ও দেবনাথের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই পুলিশ তদন্তের মোড় ঘোরায় পারিবারিক অশান্তির দিকে। তাতে ওই দুজনের দেওয়া তথ্যের মিলও পাওয়া যায় বলে তদন্তকারীরা জানান। এর পরেই মুকুলবাবুকে গ্রেফতার করা হয়।

নিহত দম্পতির ছেলে কল্লোল চট্টোপাধ্যায় বাবা-মায়ের পারলৌকিক কাজে শনিবার আসানসোলে তাঁর বাড়ি থেকে লাভপুরের বাড়িতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘দাদু জীবিত থাকতেই বাড়িটি মা কিনে নিয়েছিলেন, সেই দলিল আছে আমার কাছে। পুলিশ তদন্তে যাকে দোষী মনে করেছে তাকে গ্রেফতার করেছে। এর বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে আমার বাবা মায়ের খুনিরা যেই হোক তাদের উপযুক্ত শাস্তির জন্য আমাকে যতদূর যেতে হয় যাব।’’ এই ঘটনায় আর কে কে জড়িত তা মুকুলবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই জানা যাবে বলে পুলিশের অনুমান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement