চলছে টাকার হিসেব করা। —নিজস্ব চিত্র
রাঢ়বঙ্গের বিশেষ পর্যবেক্ষক নরেন্দ্র চৌহানের বাঁকুড়ার আসার দিনেই এক ব্যবসায়ীর দেড় লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ। সোমবার বিশেষ পর্যবেক্ষকের উপস্থিতিতে সর্বদল বৈঠকে সে প্রসঙ্গ তুলে তদন্ত দাবি করেন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক মনোরঞ্জন পাত্র। একই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওই টাকা শাসক দলের প্রার্থী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।’’ অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বিশেষ পর্যবেক্ষক।
বিধানসভা ভোটের মুখে এখন নির্বাচনী আচরণ বিধি জারি রয়েছে। সেই মতো উপযুক্ত নথি ছাড়া একলপ্তে ৫০ হাজারের বেশি নগদ টাকা সঙ্গে নিয়ে যাওয়া বিধিভঙ্গের সামিল। বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, একটি গাড়িতে এক ব্যবসায়ী দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন। বিষ্ণুপুর শহরে মহকুমা অফিসের সামনে পুলিশ চেকিং-এর সময়ে টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়।
এ দিকে টাকা বাজেয়াপ্ত হওয়ার পরেই বিধিভঙ্গের অভিযোগ তুলে আসরে নেমে পড়েছে সিপিএম, কংগ্রেস। বিষ্ণুপুরে তৃণমূলের প্রার্থী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। শ্যামবাবুর বিরুদ্ধে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী কংগ্রেসের প্রাক্তন পুরপ্রধান তুষারকান্তি ভট্টাচার্য। তুষারবাবু এবং কংগ্রেসের বাঁকুড়া জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবু চট্টোপাধ্যায়ও গোটা ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন। দুই নেতারই অভিযোগ, ‘‘টাকা-সহ গাড়িটি আটক করার পরে শ্যামবাবু দলীয় কর্মীদের পাঠিয়ে ছাড়াবার চেষ্টা করেছেন।’’ প্রতিক্রিয়া জানতে শ্যামবাবুকে একাধিকবার ফোন, এসএমএস করা করেও সাড়া মেলেনি। জেলা তৃণমূলের এক নেতা অবশ্য এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, নির্বাচনী বিধি ভেঙে ওই ব্যবসায়ী কেন এত টাকা নিয়ে যাচ্ছিলেন তার কারণ জানতে চাওয়া হবে। উত্তরে সন্তুষ্ট হলে তবেই ওই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। ওই ব্যবসায়ীর অবশ্য দাবি, ‘‘ওই বিধির কথা জানা ছিল না। ব্যবসার কাজেই ওই টাকা সঙ্গে ছিল।’’ ব্যবসায়ীর যুক্তি উড়িয়ে দিয়েছেন সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক মনোরঞ্জনবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘বেলশুলিয়া অঞ্চলে তৃণমূল কর্মীরা দলীয় কর্মীদের ভয় দেখাচ্ছে। ভোটে খাটাবার জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে।’’ উপযুক্ত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।