নির্বাচনী বিধির মধ্যেই ডিমের লেভি তুলে নিল রাজ্য

আজ, শনিবার কলকাতায় পুরভোট। তার কয়েক ঘণ্টা আগে শুক্রবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকের পরে চাষি ও ডিম ব্যবসায়ীদের এক গুচ্ছ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। এতে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০০
Share:

আজ, শনিবার কলকাতায় পুরভোট। তার কয়েক ঘণ্টা আগে শুক্রবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকের পরে চাষি ও ডিম ব্যবসায়ীদের এক গুচ্ছ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। এতে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা।

Advertisement

সিপিএম ইতিমধ্যেই নালিশ জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে। বিজেপির বক্তব্য, কমিশন নিজেই যেখানে ঠুঁটো সেখানে অভিযোগ জানিয়ে কী হবে? আর নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমি বিস্তারিত না জেনে কিছু বলব না। এটুকু বলতে পারি, নির্বাচনী বিধিতে বলা আছে, ভোট ঘোষণার পরে নতুন কোনও নীতি বা প্রকল্পের উদ্বোধন করা যাবে না।’’ যিনি এই ঘোষণা করেছেন, সেই পূর্ণেন্দুবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘সাধারণ মানুষের স্বার্থে সরকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে কোনও ভাবেই নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন হয়নি।’’
কমিশন এখন কী করবে? সুশান্তবাবুর বক্তব্য, ‘‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে যদি দেখা যায় নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন হয়েছে, তা হলে কমিশন আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেবে।’’ কমিশন সূত্রেই যদিও খবর, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন হলেও কমিশন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু বলতে পারে না। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলতে পারে মাত্র।
এ দিন পূর্ণেন্দুবাবু ঘোষণা করেন, ‘‘বাজারে ডিমের দাম বাড়ছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মুরগির খাবারের উপরে যে এক শতাংশ লেভি নেওয়া হতো, সরকার তা নেবে না। এতে কোটি টাকার বেশি রাজস্ব ক্ষতি হবে ঠিকই, কিন্তু ডিমের দাম কমবে।’’ ডিম ব্যবসায়ীদের একাংশ অবশ্য বলছেন, এ রাজ্যে প্রতি দিন ১ লক্ষ ২৫ হাজার ডিম লাগে। সেখানে রাজ্যে ডিম উৎপাদন হয় মাত্র ৪২ লক্ষ। এই ঘাটতি মেটাতে মূলত অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ডিম আনতে হয় ব্যবসায়ীদের। ফলে মুরগির খাবারের উপর থেকে লেভি তুলে নিলেও বাজারে তার কতটা প্রভাব পড়বে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাঁদের।
অন্য দিকে নির্বাচনী বিধি জারি থাকার সময়ে এই ঘোষণায় নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে বলে সরব বিরোধীরা। সিপিএম নেতা রবীন দেব বলেন, ‘‘কেবল কৃষিমন্ত্রীর ঘোষণাই নয়, ফেসবুকেও মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে কিছু ঘোষণা করেছেন। এতে নির্বাচনবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে।’’ বিজেপি বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘তৃণমূল সরকার কোনও বিধিনিষেধ মানে না। অথচ, নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়ে কোনও লাভ হচ্ছে না।’’ ডিম ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদেরও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু কত টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে তা খোলসা করেননি কৃষিমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, এ বছর আমের ফলন ভাল হওয়ায় তার পরিবহণ খরচে ভর্তুকি দেবে সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement