গত কয়েক দিন ধরে একতরফা প্রচার চলছিল। এ বার পাল্টা লড়াই শুরু হল সোশ্যাল মিডিয়াতেই। ফলও মিলতে শুরু করল হাতেনাতে।
গত কয়েকদিন ধরে রীতিমতো ঘোষণা করে ভিন্ন মতের লোকেদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালাচ্ছিল একটি ফেসবুক গ্রুপের সদস্যেরা। মঙ্গলবার অভিযান বন্ধের কথা ঘোষণা করেছে তারা। পুলওয়ামায় নিহত সিআরপি জওয়ান। হাওড়ার বাউরিয়ার বাবলু সাঁতরার স্ত্রী বারবার জানিয়েছিলেন, তিনি যুদ্ধ চান না। সে কারণে ফেসবুকে তাঁর উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করেছিলেন এক যুবক। পাল্টা আক্রমণে ওই মন্তব্য মুছে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি। পুলওয়ামা নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করায় নদিয়ার নবদ্বীপে সোমবার রাতে স্কুলশিক্ষক জয়দীপ ঘোষের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল একদল লোক। রুখে দাঁড়ান এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে জয়দীপবাবুর ছাত্রেরাও ছিল। প্রতিরোধে শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে বাধ্য হয় হামলাকারীরা।
পুলিশও জানিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা বিদ্বেষ-হিংসা-ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা করছে, তাদের বিস্তারিত তথ্য হাতে এসেছে। এ বার ব্যবস্থা নেওয়ার পালা।
গুজব, অসহিষ্ণুতা এবং ভুয়ো খবরের বিরুদ্ধে ফেসবুকের দেওয়ালেই প্রতিবাদে নেমেছিলেন নদিয়ার হরিণঘাটার এক প্রাক্তন সেনাকর্মী গৌরীশঙ্কর দে এবং তাঁর পরিবার। পুলওয়ামার ঘটনার পরে হরিণঘাটায় মোমবাতি মিছিল করেছিলেন গৌরীশঙ্করবাবু। সেই রাতেই তাঁর বাড়ির বাইরের দেওয়াল, নামের ফলকে আলকাতরা লেপে দেওয়া হয়। তার পরেই এই নিয়ে ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপে একের পর এক ভুয়ো খবর ছড়ানো হতে থাকে। বলা হয়, দেশবিরোধীদের হাতে আক্রান্ত গৌরীশঙ্করবাবু। তাঁর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
রবিবার বিষয়টি নজরে আসে ওই সেনাকর্মীর পরিবারের। তাঁর ছেলে অরুণাভ এবং মেয়ে স্নেহা ফেসবুকের ওই পেজের অ্যাডমিনকে ভুয়ো খবর সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু তা করা হয়নি। উল্টে তাঁদেরও গালাগালি করা হয়। হতবাক অরুণাভবাবু বলেন, ‘‘আমাদের ব্যবহার করে ভুল খবর ছড়ানো হচ্ছে, অথচ আমাদের কথাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তার পরেই আমি থানা এবং পুলিশ কর্তাদের কাছে অভিযোগ জানাই।’’ নিজেদের ফেসবুকে ওই পেজের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচার শুরু করেন। এর পরে ওই পোস্ট সরিয়ে দেওয়া হয়। পিছু হটতে বাধ্য হয় অপপ্রচারকারীরা। ‘দেশদ্রোহী’ বলে দাগিয়ে চড়াও হওয়ার অভিযানও বন্ধ করে তারা।