এ ভাবেই সেজে ওঠেছে মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র
কোদাল দিয়ে মাটি কেটে পুকুর খুঁড়তে ব্যস্ত মহিলারা। কারও মাথায় সেই মাটি বোঝাই ঝুড়ি। নেশায় বুঁদ হয়ে থাকা এক শ্রমিক গাছের তলায় খৈনি হাতে বিশ্রাম নিচ্ছেন। এ সবের মাঝেই মাটির মধ্যে থেকে আর্বিভাব হচ্ছে দেবী দুর্গার।
এই ছবিই এ বার দেখা যাবে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের বেনেদিঘি নব যুবক সঙ্ঘে। পঞ্চম বর্ষে এ বারে তাঁদের থিম ‘একশো দিনের কাজ’। কেন এমন ভাবনা? স্থানীয় সূত্রের খবর, এই গ্রামে এখন পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে একশো দিন প্রকল্পে কাজ করেন মহিলারা। প্রায় ৬৩০ জন শ্রমিকের মধ্যে অর্ধেকই মহিলা। প্রতিটি সংসারে রোজগার বেড়েছে ভালই। তবে অভাব কাটেনি। কারণ, এলাকায় চলা মদের ভাটি। স্থানীয় বাসিন্দা প্রতিমা পাত্র বলেন, “আমি ও আমার স্বামী দু’জনেই একশো দিনের কাজ করায় আগের তুলনায় সংসার সচ্ছল হয়েছে। ছেলেটা একাদশ শ্রেণিতে পড়েছে। কিন্তু স্বামী এলাকার কিছু লোকের পাল্লায় পড়ে এখনও নেশা করছে। ফলে অভাব মেটেনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা মহিলারা প্রতিবাদ করলেও মদ ভাটি বন্ধ হচ্ছে না। তাই আমাদের কথা ভেবে এমন থিমে আমরা আপ্লুত।”
উদ্যোক্তারা জানালেন, নারীশক্তির আরাধনায় মহিলা শ্রমিকদের সম্মান জানাতেই বেছে নেওয়া হয়েছে এই থিম। দেওয়া হয়েছে নেশামুক্তির বার্তাও। কাজের ফাঁকে সদ্যোজাতকে স্তন্যপান করাচ্ছেন মা, এমন দৃশ্যও মডেলের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। পুজো কমিটি কর্মকর্তা বিপ্লব ভৌমিক বললেন, ‘‘আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাক-বাসের থেকে চাঁদা তুলিনি। মূলত একশো দিনের প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকরা সাধ্যমতো টাকা দিয়েছে, তা দিয়েই পুজো করছি। গ্রামের মহিলাদের হাসিতেই আসল মাতৃবন্দনা হয়ে গিয়েছে।”