সপ্তমীতে দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে উপচে পড়ছে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
সপ্তমীর সন্ধ্যা তখনও নামেনি। বালি সেতুর দক্ষিণেশ্বরমুখী রাস্তায় সার দিয়ে দাঁড়ানো বাইক। সেতুর ফুটপাত কমবয়সিদের ভিড়ে জমজমাট। পরিকল্পনা করে সেখান থেকেই একের পর এক বাইক হুশ করে বেরিয়ে যাচ্ছে বিটি রোডের দিকে।
তবে থমকাতে হচ্ছে দক্ষিণেশ্বর মোড়ে পৌঁছতে গিয়ে। কারণ, মেট্রো স্টেশনে যাতায়াতের ভিড়। মেট্রো সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল ৪টের মধ্যেই দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে তিন লক্ষ টাকার বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। সপ্তমীর বিকেল থেকেই দর্শনার্থীদের একটি বড় অংশ শহরের পুজো মণ্ডপ দর্শনের আগে বা ফেরার পথে ঢুঁ মেরেছেন বরাহনগর, সোদপুর, বেলঘরিয়ার মণ্ডপে।
রাজনীতির ময়দানে সখ্য থাকলেও পুজোয় একে অপরের প্রতিপক্ষ বরাহনগরের ন’পাড়া দাদাভাই সঙ্ঘ এবং নেতাজি কলোনি লোল্যান্ডের দুই কর্মকর্তা। ন’পাড়া দাদাভাই সঙ্ঘের কর্মকর্তা তথা বরাহনগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ অঞ্জন পাল বলেন, ‘‘চতুর্থী থেকেই প্রায় সারা রাত ধরে, সিলিকনের দুর্গা অদৃশ্য হয়ে মাটির প্রতিমা সামনে আসার রহস্য দেখতে মানুষের ঢল নেমেছে।’’ সপ্তমীর মধ্য রাতেও নেতাজি কলোনি লোল্যান্ডের জলাশয়ের সামনে জনতার স্রোত। লাইন এগোনোর বাঁশির শব্দে কান ঝালাপালা হলেও সুদৃশ্য জাহাজকে পিছনে রেখে নিজস্বী তুলতে ব্যস্ত দর্শনার্থীরা। কর্মকর্তা তথা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপনারায়ণ বসুর কথায়, ‘‘স্থায়ী একটা দর্শক তৈরি হয়ে গিয়েছে। সকলের কাছেই এই পুজো কৌতূহলের।’’
সময় যত গড়িয়েছে, খড়দহ অরুণাচল সর্বজনীন, পানিহাটি শহিদ কলোনি, বেলঘরিয়া মানসবাগের মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় ক্রমেই বেড়েছে। দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের সামনে ‘এ বার দক্ষিণেশ্বরে মা দুর্গা! সত্যি নাকি?’— এমন ব্যানার দিয়ে চমক দিয়েছে ‘দক্ষিণেশ্বর ডোমেস্টিক এরিয়া’ পুজো কমিটি। সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের পুজো বলে পরিচিত, সোদপুর বার্মাশেলে প্যারিসের অপেরা দেখতে জনতার ঢল নেমেছে রাত আড়াইটেতেও। পাশাপাশি, উদয়ন সঙ্ঘের মণ্ডপেও বিকেল থেকে শুরু হওয়া ভিড় রাত গড়াতে পরিণত হয়েছে জনজোয়ারে। কর্মকর্তা তথা পানিহাটির পুরপ্রতিনিধি সম্রাট চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এর জন্যই তো শহরতলির পুজোতেও এত আয়োজন!’’