—ফাইল চিত্র।
শেষ পর্যন্ত মেলেনি প্রশাসনিক অনুমতি। এই পরিস্থিতিতে নদিয়ার রানাঘাটে ‘সবচেয়ে বড়’ দুর্গার পুজো না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নিল পুজো কমিটি। তাদের বক্তব্য, গ্রামবাসীদের টাকায় পুজো করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যেই মামলা-মোকদ্দমায় অনেক টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। আর মামলা লড়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা তাদের নেই। আর প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও যাওয়ার কোনও অভিপ্রায় নেই তাদের।
১১২ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরির ঘোষণা করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল রানাঘাটের কামালপুর অভিযান সঙ্ঘ। তাদের দাবি ছিল, এটিই হবে ‘বাংলার সবচেয়ে বড় দুর্গা’। কিন্তু পুলিশ ওই পুজোয় অনুমতি দেয়নি। কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন উদ্যোক্তারা। আদালতে প্রশাসন জানায়, দেশপ্রিয় পার্কের ঘটনা মাথায় রেখে ওই পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিশালাকার ওই প্রতিমা দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় করবেন। এর ফলে পদপিষ্টের মতো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। সোমবার বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ জানান, মণ্ডপের ভিতরে প্রবেশ না করে বাইরে থেকে কি দর্শন সম্ভব? এই বিষয়টি বিবেচনা করে জেলাশাসককে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হাই কোর্টের ওই নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার রিপোর্ট দিয়েছিলেন নদিয়ার জেলাশাসক।
রিপোর্টে জেলাশাসক জানিয়েছিলেন, ১২ ফুট চওড়া রাস্তার উপর মণ্ডপ করা হয়েছে। আশপাশের গ্রামের মধ্যে সেটিই একমাত্র রাস্তা। অ্যাম্বুল্যান্স-সহ জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত গাড়িই ওই রাস্তা দিয়েই যায়। ওই রাস্তার উপর গ্রামের মানুষেরা নির্ভরশীল। ফলে অনুমতি দিলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। তা ছাড়া বিপুল ভিড় হলে তা সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। জেলাশাসক আরও জানান, পর্যাপ্ত পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবক রাখা হলেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। কোনও অঘটন ঘটলে অ্যাম্বুল্যান্সকে ওই রাস্তা দিয়েই পার করাতে হবে। ভিড়ের মধ্যে তা সম্ভব নয়। মানুষের জীবনহানির আশঙ্কা থেকেই পুলিশ-প্রশাসন ওই পুজোর অনুমতি বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে। জেলাশাসকের ওই সিদ্ধান্তের পরে পুজো না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এ বার হাই কোর্ট থেকে মামলাও প্রত্যাহার করে নিলেন তাঁরা।