public prosecutor

Public Prosecutor: সরকারি কৌঁসুলি কম, জমে যাচ্ছে অসংখ্য মামলা

ওই ডেটা গ্রিডের তথ্য জানাচ্ছে, বাংলার নিম্ন আদালতগুলিতে প্রায় ২৫ লক্ষ মামলা বকেয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২১ ০৫:৫৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন নিম্ন আদালতে মামলার পাহাড় জমে থাকার যথার্থ কারণ কী, রাজ্য প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই তা ব্যাখ্যা করতে বলেছে কলকাতা হাই কোর্ট। এই সমস্যার সুরাহায় রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ করছে, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলায় জেলায় নিম্ন আদালতগুলিতে বিপুল সংখ্যক মামলা বকেয়া থাকার অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসছে পর্যাপ্ত সরকারি আইনজীবী না-থাকার কথা। ন্যাশনাল জুডিশিয়াল ডেটা গ্রিডের তথ্য অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গে শুধু কৌঁসুলির অভাবেই প্রায় এক লক্ষ পঁচাশি হাজার মামলার বিচারে বিলম্ব হচ্ছে।

Advertisement

ওই ডেটা গ্রিডের তথ্য জানাচ্ছে, বাংলার নিম্ন আদালতগুলিতে প্রায় ২৫ লক্ষ মামলা বকেয়া। তার মধ্যে ফৌজদারি মামলাই ১৯ লক্ষ! বাকি সব দেওয়ানি মামলা।
প্রায় এক লক্ষ একুশ হাজার মামলার বিচার বিলম্বিত হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ৩৬ হাজার মামলার বিচারে বিলম্বের কারণ কৌঁসুলির অভাব। এর পাশাপাশি এক বা একাধিক অভিযুক্ত ফেরার থাকায় ৩২ হাজার এবং সাক্ষীদের নিরাপত্তাজনিত কারণে ২৩ হাজার মামলার বিচারে দেরি হচ্ছে। প্রায় ১০ হাজার মামলা ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে এবং ২০ বছরের বেশি, কিন্তু ৩০ বছরের কম সময় ধরে চলান মামলার সংখ্যা প্রায় ৩৭ হাজার!

কৌঁসুলির অপ্রতুলতার কথা মেনে নিচ্ছেন অনেক সরকারি আইনজীবী। তাঁরা বলছেন, মামলার সংখ্যার তুলনায় সরকারি কৌঁসুলি কম। তার ফলে এক-এক জনের ঘাড়ে অনেক মামলার দায়িত্ব থাকছে। এই অতিরিক্ত মামলার চাপের উদাহরণ দিতে গিয়ে অনেকেই বলছেন, ইদানীং খুন বা ডাকাতির সঙ্গে সাইবার অপরাধও জুড়ে যাচ্ছে। তার জন্য সাইবার কৌঁসুলি দরকার। এই মুহূর্তে রাজ্যে বিশেষ সাইবার কৌঁসুলি এক জনই— বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে রাজ্যের বিভিন্ন নিম্ন আদালত ও কলকাতা হাই কোর্টে একাই মামলা লড়তে হচ্ছে। ‘‘আরও কৌঁসুলি থাকলে সুবিধা হত। তবে অতিরিক্ত চাপ সত্ত্বেও কিছু ক্ষেত্রে আদালতের সহযোগিতায় মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে,’’ বলেন বিভাসবাবু।

Advertisement

কলকাতার নগর দায়রা আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি দীপঙ্কর কুণ্ডুর বক্তব্য, সরকার পক্ষের তরফ থেকে সব সময়েই কৌঁসুলিরা উপস্থিত থাকেন। কিন্তু অনেক সময় নানা কারণে অভিযুক্ত পক্ষের কৌঁসুলি উপস্থিত হতে না-পারলে শুনানি পিছিয়ে দিতে হয়। তিনি বলেন, “আমাদের তরফে কোনও গাফিলতি নেই, এটুকু বলতে পারি। বরং গুরুত্বপূর্ণ মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হয়।” আইনজীবীদের অনেকে অবশ্য বলছেন, নিম্ন আদালতে বহু ক্ষেত্রে বিচারক-পদ শূন্য রয়েছে। তার জন্যও কিছু মামলার বিচার বিলম্ব হচ্ছে।

কারণ যা-ই হোক, বিচারে বিলম্ব সমাজের ক্ষেত্রে অশনি সঙ্কেত বলেই মনে করছেন বিভাসবাবুরা। তাঁর মতে, বিচারে বিলম্ব হলে অপরাধীদের এমন ধারণা হতে পারে যে, গ্রেফতার হলেও দীর্ঘদিন মামলা চলতে থাকায় সাজা হবে না। বরং বিচারে বিলম্ব হওয়ায় জামিনে মুক্তি মিলতেও পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement