সন্ন্যাসিনী-ধর্ষণে লাগাতার প্রতিবাদ-বিক্ষোভ চলছে কলকাতায়। নদিয়াতে রাজনৈতিক দলগুলির বিক্ষোভও জারি। কিন্তু হঠাৎ করেই ‘রানাঘাট প্রতিবাদী মঞ্চ’-এর ধর্নাস্থল এ দিন থেকে জনশূন্য।
গত সোমবার থেকে রানাঘাটের স্কুলটির সামনে ধর্না শুরু করেছিল ওই প্রতিবাদী মঞ্চ। কথা ছিল, দোষীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত ধর্না চলবে। স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার প্রতিবাদী মঞ্চের কোনও কোনও কর্মীর বাড়িতে এবং পাড়ায় গিয়ে গিয়ে তাঁদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয় পুলিশ। তার পর এ দিন সকাল থেকেই ধর্না-মঞ্চে কেউ আসেননি। রানাঘাট প্রতিবাদী মঞ্চের অবশ্য দাবি, মঞ্চের সঙ্গে যুক্তরা অধিকাংশই পড়ুয়া। ধারাবাহিক ভাবে ধর্না দিলে তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে। তাই ধর্নার কর্মসূচি আপাতত বাতিল করা হয়েছে।
তবে নদিয়া জুড়ে এ দিন সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন থানার সামনে বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করে বিজেপি। তা চলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। পরে থানাগুলিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয় বলে জানান জেলা বিজেপির মুখপাত্র সৈকত সরকার। তিনি বলেন, “রানাঘাটের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে এবং মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় রুখে প্রতিবাদের ঘটনায় বিজেপিকে অভিযুক্ত করার প্রতিবাদে থানার সামনে এ দিনের বিক্ষোভ অবস্থান হয়েছে।” রানাঘাটে এ দিন বামফ্রন্টের মিছিল জিআরপি গেট থেকে শুরু করে সারা শহর ঘুরে ফের সেখানেই শেষ হয়।
কলকাতার অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে শনিবার মুক্তমঞ্চে প্রতিবাদ সভা করে ‘সেভ ডেমোক্রেসি ফোরাম’। কলেজ স্কোয়ার থেকে প্রতিবাদ মিছিল করে ‘নারী নিগ্রহ বিরোধী কমিটি’, ‘শিল্পী-সাংস্কৃতিক-কর্মী ও বুদ্ধিজীবী মঞ্চ’-সহ কয়েকটি সংগঠন। অ্যাকাডেমির সামনে ‘ফোরামে’র প্রতিবাদের সুর ছিল চড়া। রানাঘাট-কাণ্ডের জেরে বহির্বিশ্বের সামনে এ রাজ্যের মাথা হেঁট হয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার। চলচ্চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদার বলেন, “যারা আমাদের এই প্রতিবাদ আন্দোলনে আসবে না, তাদের সমাজ-বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করব।” রানাঘাট-কাণ্ডের সমালোচনায় সরব হন ‘ফোরামে’র চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। ছিলেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানও। কলেজ স্কোয়ার থেকে মিছিলটি বেরোয় বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ। মিছিল শেষ হয় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। ওই মিছিলে ছিলেন মীরাতুন নাহার, তরণ সান্যাল, তরুণ মণ্ডল প্রমুখ।