কাজ চলছে টালা সেতুর। ফাইল চিত্র।
প্রস্তাবিত নতুন টালা সেতুর নানান অংশ তৈরির কাজ চলছে বিভিন্ন জায়গায়। প্রকল্পের প্রায় সব জটই কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে। চূড়ান্ত হয়েছে সেতুর নকশা এবং রেল-কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি সেটি অনুমোদনও করেছেন বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর। কমিশন অব রেলওয়ে সেফটি (সিআরএস)-র কাছ থেকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাওয়াটুকুই যা বাকি। সেটি মিললেই নির্মাণকাজে গতি আসবে।
ওই সেতু নিয়ে রেল-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চালাচ্ছিল রাজ্য সরকার। পানাগড়-সহ কয়েকটি এলাকায় সেতুর বিভিন্ন অংশ তৈরি হচ্ছে। সিআরএসের ছাড়পত্র পাওয়া গেলে নির্মিত অংশগুলি এনে ক্রেনে করে সেতুর মূল কাঠামোর উপরে ‘লঞ্চ’ করা হবে বা নিখুঁত মাপে বসানো হবে।
এক প্রশাসনিক কর্তা বলেন, ‘‘সেতুটি তৈরি হচ্ছে খুবই আধুনিক প্রযুক্তিতে। কোনও নাট-বোল্ট ব্যবহার হচ্ছে না। এর ফলে কাঠামোর স্থায়িত্ব অনেকটাই বাড়বে। মূল নকশাটি রেলের ছাড়পত্র পাওয়ায় সিআরএসের ছাড়পত্র পেতে দেরি হবে না বলেই আশা করা হচ্ছে।’’ সেতুর এক দিকে রেলের যে-আবাসন ভাঙতে হবে, তার জন্য ইতিমধ্যেই রেলকে টাকা দিয়েছে রাজ্য। ৩৮-৩৯টি কোয়ার্টার বা আবাসনের জন্য এই অর্থ মঞ্জুর করা হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।
পূর্ত দফতরের বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ১৯৬২ সালে তখনকার সম্ভাব্য ভারবহন ক্ষমতার হিসেব কষে টালা সেতুর নকশা তৈরি করা হয়েছিল। এ বার অন্তত ১০০ বছরের সম্ভাব্য পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সেতুর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা হচ্ছে। নকশা তৈরি হয়েছে ইন্ডিয়ান রোড কংগ্রেসের সাম্প্রতিকতম ‘কোড’ মেনে। ইন্ডিয়ান রোড কংগ্রেসের বিধি অনুযায়ী এমন সেতু তৈরি করা দরকার, যা অন্তত ৩৮৫ টনের চলমান গাড়ির ওজন বহনে সমর্থ হয়।
প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, প্রশাসনিক জট অনেকটা কেটে গেলেও টালা সেতুর কাজ কবে শেষ হবে, তার অনুমান না-করাই ভাল। কারণ, এখনও কোভিড পরিস্থিতি পুরোপুরি কাটেনি। ফলে কাজ করতে হচ্ছে করোনা বিধি মেনে। তা ছাড়া সেতুর কাঠামো তৈরি হয়ে গেলে তার ভারবহনের ক্ষমতা যাচাই করাটাই হবে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।