প্রতীকী ছবি
মূল মামলায় আট হাজার কোটি টাকার নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা রোজ ভ্যালির সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ-পর্যন্ত মেরেকেটে ১৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন ইডি অফিসারেরা। রোজ ভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু এবং তাঁদের বিভিন্ন সংস্থার নামে থাকা প্রায় চার হাজার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নতুন করে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু হয়েছে। আর সেটা করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, জমি কেনা, অফিস ভাড়া নেওয়া, অন্য কোনও কোনও সম্পত্তি কেনা বা ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রেও বহু জায়গায় অগ্রিম টাকা দিয়েছেন গৌতম। তার মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে চুক্তি হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে তা-ও হয়নি। শুধু অগ্রিম দেওয়ার রসিদ রয়েছে। কোথাও সম্পত্তির পুরো টাকা দেওয়া সত্ত্বেও তার রেজিস্ট্রেশন বা মিউটেশন হয়নি। কোথাও টাকা দিলেও হয়নি নাম পরিবর্তন। ফলে সেই সব টাকার কোনও আইনি কাগজপত্র নেই রোজ ভ্যালির কাছে।
ইডি অফিসারেরা এখন সেই সব অগ্রিম টাকা বা তা দিয়ে বুক করা সম্পত্তি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন। ইডি সূত্রের খবর, মধ্য কলকাতায় একটি নির্মাণ সংস্থার বহুতলে ১০ হাজার বর্গ ফুট এলাকা অফিসঘরের জন্য কেনার কথা ছিল রোজ ভ্যালির। ওই অফিসঘরের দাম নির্ধারিত হয়েছিল ৪১ কোটি টাকা। ২০১২ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত অগ্রিম হিসেবে ১৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। তার পরে গৌতম গ্রেফতার হন। আর টাকা দেওয়া হয়নি। সেই থেকে ওই নির্মাণ সংস্থার কাছে রোজ ভ্যালির ১৬ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। ওই অফিসঘরও রয়ে গিয়েছে নির্মাণ সংস্থার হাতে।
ইডি সূত্রের খবর, ওই নির্মাণ সংস্থার কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে ১৬ কোটি টাকা। ইডি-কর্তাদের মতে, সেই টাকা ওই সংস্থা ইডি-র হাতে তুলে দিলে ভাল। নইলে ওই পুরো অফিস এলাকা, যার জন্য ১৬ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল, তা বাজেয়াপ্ত করে নেবে ইডি। ইএম বাইপাসের ধারে একটি বহুতলে এই ভাবেই একটি অফিস এলাকা বাজেয়াপ্ত করে তালা মেরে দিয়েছে ইডি।
ওই তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারে রোজ ভ্যালির যত টাকা রয়েছে, সেগুলো তো বাজেয়াপ্ত করা হবেই। সেই সঙ্গে যে-সব সম্পত্তি রয়েছে, তা বাজেয়াপ্ত ও বিক্রি করে সেই টাকাও নিজেদের হেফাজতে রাখতে চাইছে ইডি। যে-সব সাধারণ মানুষ রোজ ভ্যালিতে টাকা দিয়ে আর ফেরত পাননি, তাঁদের ওই টাকা থেকে তাঁদের প্রাপ্য ফিরিয়ে দেওয়া হবে।