—প্রতীকী ছবি
বঙ্গবাসীর দরজায় সমস্যার সমাধান পৌঁছে দিতে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই সব শিবির থেকে ইতিমধ্যে পাঁচ লক্ষেরও বেশি স্বাস্থ্যসাথী স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু নতুন পাওয়া কার্ড নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে কোনও কোনও ক্ষেত্রে সমস্যাও শুরু হয়েছে তার মান্যতা নিয়ে। স্বাস্থ্য ভবন জানতে পেরেছে, বহু ক্ষেত্রেই শিবিরে দেওয়া স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ‘ডুপ্লিকেট’ বলে ফিরিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল। পরিষেবা পাননি কেউ কেউ।
প্রাথমিক যাচাইয়ের পরে স্বাস্থ্য ভবন জানাচ্ছে, এক বার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরির পরেও দ্বিতীয় বার যাঁরা কার্ড করিয়ে নিয়েছেন, সমস্যা হচ্ছে মূলত তাঁদের নিয়েই। পরিবার ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে যাঁরা আলাদা কার্ড করাতে আসছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে। স্বাস্থ্যকর্তাদের অনুরোধ, আগে কার্ড পেয়ে থাকলে নতুন করে যেন আর আবেদন করা না-হয়। তার কোনও প্রয়োজন নেই। আর যদি নতুন কার্ড নিতান্তই করাতে হয়, সে-ক্ষেত্রে তার ‘ভ্যালিডেশন’ অবশ্যই করাতে হবে। স্বাস্থ্যসাথীর মূল তথ্যভান্ডারের সঙ্গে প্রাপকের কার্ড যথাযথ ভাবে যুক্ত না-থাকলে হাসপাতালে পরিষেবা মিলবে না।
সমস্যা হচ্ছে কেন? স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, আবেদন জমা পড়ার পরে স্বাস্থ্য দফতর আবেদনকারীর আধার কার্ডের মাধ্যমে নাম-ঠিকানা যাচাই করছে। তার পরে সংশ্লিষ্ট পরিবারের নামে যে-কার্ড দেওয়া হচ্ছে, তার চিপ নম্বরও সংযুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। অনেকের ধারণা, এ বারের কার্ডটিতে বেশি সুবিধা রয়েছে। ফলে আগে যাঁরা কার্ড করিয়েছেন, তাঁরাও দুয়ারে সরকার প্রকল্পের শিবিরে এসে নতুন করে আবেদন করছেন। দেখা যাচ্ছে, ওই আধার নম্বরে আগে থেকেই কোনও কার্ড সংযুক্ত করা আছে। সে-ক্ষেত্রে নতুন কার্ডটি ‘ডুপ্লিকেট’ বলে চিহ্নিত হয়ে যাচ্ছে। এমন কার্ড নিয়ে যাঁরা হাসপাতালে
যাবেন, তাঁরা পরিষেবা পেতে সমস্যায় পড়তেই পারেন বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। স্বাস্থ্য ভবন জানাচ্ছে, এক বার কার্ড হয়ে থাকলে আর নতুন করে আবেদন করার দরকার নেই। পুরনো কার্ডেই কাজ চলবে। ‘‘ডেটাবেসে ডুপ্লিকেট হিসেবে নথিভূক্ত কার্ড নিয়ে কেউ যদি ভেলোরে পৌঁছে যান, তা হলে সমস্যায় পড়বেন। তাই ভুলভ্রান্তি দেখে নিতে হবে,’’ বলেন এক কর্তা।
স্বাস্থ্যকর্তাদের অভিজ্ঞতা, কোনও কোনও পরিবারের সরকারি চাকুরে বা পেনশনভোগী থাকা সত্ত্বেও ২১ বছরের বেশি বয়সি ছেলেমেয়েরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করছেন। আইনত সেই আবেদন গ্রহণ করতে হচ্ছে। সেই সব আবেদন নিয়েও কিছু জটিলতা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে গত দু’তিন বছরে পরিবার ভেঙে গিয়েছে। ফলে আলাদা ভাবে কার্ডের আবেদন জমা পড়ছে। তবে সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যসাথী ঘিরে দুয়ারে সরকার প্রকল্পে আগ্রহ সব চেয়ে বেশি। মোট যত আবেদন জমা পড়েছে, তার ৭৩% স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্যই। তাই তাঁরাও যথাসম্ভব ত্রুটিমুক্ত পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে জানান স্বাস্থ্যকর্তারা।