—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
একই বাড়িতে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সঙ্গে অন্য বোর্ডের প্রাথমিক স্কুল। রাজ্যের বেশ কিছু সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের ভবনে চলে আসছে এই ব্যবস্থা। এই সব প্রাথমিক স্কুলকে অন্যত্র সরানোর দাবি উঠল। হিন্দু, হেয়ার, টাকি, বেথুন, বাগবাজার মাল্টিপারপাসের মতো সরকারি স্কুলগুলিকে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত রয়েছে। সেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ক্লাস একই ভবনে হওয়ায় সমস্যা নেই। অথচ সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে স্কুলের ক্ষেত্রে দেখা যায়, নাম একই থাকলেও, তার কর্তৃপক্ষ আলাদা (নন-ইন্টিগ্রেটেড)। একই ভবনে দুই স্তরের ক্লাস চলছে।
শিক্ষকদের একাংশের মতে, এতে দুই স্তরেই পড়াশোনার নানা ব্যঘাত ঘটছে। স্কুলের সময় কমে যাচ্ছে। তাঁদের দাবি, প্রয়োজনে মাধ্যমিক স্কুল প্রাঙ্গণে আলাদা ভবনে প্রাথমিক স্কুলের ক্লাস হোক। প্রাথমিক স্কুল সাধারণত সকালে হয়। স্কুল ছুটি হয় পৌনে এগারোটা নাগাদ। মাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়ারা স্কুলে চলে আসে সাড়ে দশটার মধ্যে। ফলে একদিকে প্রাথমিক স্কুলের ক্লাস দ্রুত শেষ করার তাড়া থাকে। আবার প্রাথমিক স্কুল শেষ হওয়ার ক্লাসঘর পরিষ্কার করার সুযোগ থাকে না। তড়িঘড়ি মাধ্যমিক স্তরের ক্লাস শুরু করে দিতে হয়। নদিয়ার কল্যাণীর পান্নালাল ইনস্টিটিউশনেও একই নামে নন-ইন্টিগ্রেটেড প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল চলছে।
মাধ্যমিক স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক তথা কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘একই ভবনে দু’টি স্কুল চলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের ক্লাসের সময় নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। অনেক প্রাথমিক স্কুল আবার নিজের বাড়ি থাকা সত্ত্বেও মাধ্যমিক স্কুলের বাড়ি থেকে নড়ছে
না।’’একই নামে এবং একই ভবনে থাকা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তৃপ্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘স্কুলে মাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়ারা চলে আসে বলে প্রাথমিকে তাড়াতাড়ি ছুটি দিতে হয়।’’ তৃপ্তি জানান, তাঁদের নতুন ভবন তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেখানে ক্লাসঘরের সংখ্যা কম। আরও বেশি ক্লাসঘর তৈরির জন্য আবেদন করা হয়েছে।
২০১২ শিক্ষাবর্ষে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষা দফতর জানিয়ে দেয়, একই ভবনে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুল চললে প্রাথমিকের পড়ুয়া সরাসরি তাতে ভর্তি হতে পারবে। এখন লটারির মাধ্যমে স্কুলগুলিতে ভর্তি নেওয়া হয়। একই ভবনে পড়ার সুবিধা থাকায় কিছু প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়া সরাসরি মাধ্যমিকে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। তাদের আর লটারির মাধ্যমে আসতে হচ্ছে না। তবে আশপাশের স্কুলের পড়ুয়াদের লটারির মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ কমছে। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা বলেন, ‘‘প্রাথমিক স্কুলগুলিকে দ্রুত নিজের বাড়ি তৈরি করে নিতে বলা হয়েছে।’’ তবে রাজ্য জুড়ে সব প্রাথমিক স্কুলের আলাদা ভবন গড়া মুশকিল বলে জানাচ্ছেন শিক্ষা দফতরের কর্তারা।