ফাইল চিত্র
মাস তিনেক আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন, প্রাথমিকের দুই স্তরের বিভিন্ন পদে নিয়োগ পর্ব পুজোর আগেই সাঙ্গ হয়ে যাবে। অথচ প্রাথমিক স্তরে ১৬ হাজার ৫০০ শিক্ষকপদে নিয়োগ হলেও উচ্চ প্রাথমিকে ১৪ হাজার ৩৪৯টি পদে নিয়োগ আটকে গিয়েছে আইনি জটে। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া কবে সম্পূর্ণ হবে, তার সদুত্তর মিলছে না। উচ্চ প্রাথমিকে এক লক্ষ বত্রিশ হাজার টেট পাশ প্রার্থীর তথ্য যাচাই করে ইন্টারভিউয়ের তালিকায় নাম ওঠে ১৫ হাজার ৪৩৬ জনের। তাঁদের ইন্টারভিউও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে আইনি জটিলতায় নিয়োগ নিয়ে ফের শুরু হয়েছে অনিশ্চয়তা।
উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য টেটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৬ সালে। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া গত বছরের ১১ ডিসেম্বর আদালতের রায়ে খারিজ হয়ে যায়। পরে পুনরায় সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য এ বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল আদালত। সেই সময়সীমাও অতিক্রান্ত। তথ্য যাচাইয়ের পরে যে-সব প্রার্থী ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি, তাঁদের মধ্যে অনেকে মামলা করায় উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া ফের আটকে যায়। আদালত জানিয়েছে, যাঁরা ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি, অথচ মনে করছেন ডাক পাওয়ার যোগ্য, এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তাঁদের অভিযোগ শুনতে হবে এবং তার রিপোর্ট দিতে হবে আদালতে।
ইন্টারভিউয়ে ডাক না-পাওয়া যে-সব প্রার্থী অভিযোগ করেছেন, তাঁদের শুনানি এখনও চলছে এসএসসি-তে। ২০ জুলাই কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, ইন্টারভিউয়ে যাঁদের নাম ওঠেনি, সেই সব প্রার্থীর অভিযোগ ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জমা নিতে হবে। এবং তার নিষ্পত্তি করে আদালতে রিপোর্ট দিতে হবে ১২ সপ্তাহের মধ্যে। সেই সময় অতিক্রান্ত হতে খুব বেশি দেরি নেই।
উচ্চ প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সহ-সভাপতি সুশান্ত ঘোষ জানান, অনেক প্রার্থী রয়েছেন, যাঁরা এই নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দু’বার ইন্টারভিউ দিলেন। কারণ আগের নিয়োগ প্রক্রিয়া পুরোটাই বাতিল হয়ে গিয়েছে। ওই সব প্রার্থী ভীষণ হতাশা ও উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। সুশান্ত বলেন, “২১ জুন মুখ্যমন্ত্রী নবান্ন সভাঘরে ঘোষণা করেছিলেন, পুজোর আগে প্রাথমিক আর উচ্চ প্রাথমিকে সব নিয়োগ হয়ে যাবে। প্রাথমিকে নিয়োগ হয়েছে, কিন্তু উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের বিষয়টি ফের আটকে গেল। নিয়োগের অপেক্ষায় এক-এক করে আটটি বছর অতিক্রান্ত। তবু নিয়োগ অধরা।”
স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান শুভশঙ্কর সরকার বলেন, “প্রথমে মনে করা হয়েছিল, ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়নি, এই ধরনের ১২ হাজার প্রার্থীর শুনানি করতে হবে। এখন সেই সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজারের মতো। খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ করেও নির্ধারিত ১২ সপ্তাহের মধ্যে এত প্রার্থীর শুনানি কার্যত সম্ভব নয়। তাই আমরা আদালতে আরও কিছুটা সময় চেয়ে আবেদন করেছি।”