—প্রতীকী ছবি।
স্কুলের পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের আলাদা করে পড়াতেই পারেন সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষকরা। কিন্তু কোনও স্কুলশিক্ষক তাঁর নিজের লাভের জন্য ‘প্রাইভেট টিউশন’ করতে পারবেন না।
অভিযোগ উঠেছে, কলকাতা হাই কোর্টের এই নির্দেশকে অমান্য করছেন স্কুলশিক্ষকদের একাংশ। গৃহশিক্ষকদের সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির অভিযোগ, যে স্কুলশিক্ষকেরা গৃহশিক্ষকতা করছেন বলে অভিযোগ, তাঁদের বিরুদ্ধে তিন মাসের মধ্যে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিল হাই কোর্ট। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি পর্ষদ।
পশ্চিমবঙ্গ গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির সভাপতি হীরালাল মণ্ডল বলেন, ‘‘২০টা জেলার পাঁচ হাজার স্কুলশিক্ষক প্রাইভেট টিউশন করছেন বলে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছি। তাঁদের নামের তালিকা মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে বুধবার জমা দিচ্ছি।’’ আজ, বুধবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদে এ নিয়ে ডেপুটেশন দেওয়া ছাড়াও করুণাময়ীতে অবস্থান করবে পশ্চিমবঙ্গ গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতি।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে স্কুলশিক্ষকদের বিরুদ্ধে গৃহশিক্ষকতা করার অভিযোগ উঠেছে। তাঁদের মতো যাঁরা শুধু গৃহশিক্ষকতা করেই সংসার চালাচ্ছেন, তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ। গৃহশিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত স্কুলশিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এর আগে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে শিক্ষা দফতরেও। লাভ হয়নি বলেও তাঁদের দাবি।
চলতি বছরে বিষয়টি নিয়ে গৃহশিক্ষকদের একটি সংগঠন কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে গত ১ মে আদালত তিন মাসের মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে ব্যবস্থা নিতে বলে। হীরালাল বলেন, ‘‘স্কুলশিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতা করার সব থেকে বেশি উদাহরণ হুগলি, পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, বীরভূম, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে পাওয়া গিয়েছে। স্কুলের শিক্ষকেরা প্রকাশ্যে গৃহশিক্ষকতা করছেন, এটা জানার পরেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না প্রধান শিক্ষকেরাও।’’
প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘মধ্যশিক্ষা পর্ষদ শিক্ষকদের নিয়োগকারী সংস্থা। কোনও শিক্ষক গৃহশিক্ষকতা করছেন কি না, তার তদন্ত জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকদের মাধ্যমে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের করার কথা। প্রধান শিক্ষকদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না। শিক্ষকেরা বাইরে কী করছেন, তা প্রধান শিক্ষকদের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। তদন্ত করার অধিকারও নেই।’’
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভাল করে খোঁজ নিয়ে তার পরেই বলতে পারব।’’ গৃহশিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, আদালতের নির্দেশের পরেও পর্ষদ ব্যবস্থা না নেওয়ায়, তাঁরা ফের হাই কোর্টে মামলা করবেন।