রোমা ঝাওয়ার এবং গুঞ্জন ঘোষ। ফাইল চিত্র।
বিধাননগরের রোমা ঝাওয়ার অপহরণ কাণ্ডের পরে মুক্তিপণের টাকা ভাগাভাগির ঝগড়ায় খুন হয় এক অপহরণকারী। অরবিন্দ প্রসাদ নামে সেই যুবক খুনের মামলায় সোমবার চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আলিপুরের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক শেখ কামালউদ্দিন।
আদালত সূত্রের খবর, ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে রোমাকে অপহরণ করে তাঁরই বন্ধু গুঞ্জন ঘোষ এবং তার সঙ্গীরা। ৫ ফেব্রুয়ারি ফুলবাগানে মুক্তিপণের ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে রোমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ফুলবাগানেই গাড়িতে বসে সেই টাকা ভাগবাঁটোয়ারার সময় গন্ডগোল বাধে। পাপ্পু সিংহ নামে গুঞ্জনের এক সঙ্গী গুলি করে অন্য সঙ্গী অরবিন্দকে গাড়ির মধ্যেই খুন করে। পরে তিলজলা থানা এলাকায় ওই যুবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। অপহরণ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত গুঞ্জন-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। ধৃতদের জেরা করে জানা যায়, নিহতের নাম অরবিন্দ। বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে ছিল পাপ্পু, মুন্না সিংহ, দীনেশ যাদব ওরফে গুড্ডু, মুকেশ সিংহ। এদের মধ্যে পাপ্পু আজও অধরা।
রোমা অপহরণের মামলায় গুঞ্জন, মুন্না, দীনেশ ও মুকেশকে ইতিমধ্যেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে বারাসত আদালত। খুনের মামলাতেও তাদের একই সাজা হল। বিচারক শেখ কামালউদ্দিন গত বৃহস্পতিবার অরবিন্দের হত্যাকাণ্ডে গুঞ্জন-সহ চার জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। অভিযুক্তেরা এ দিন আদালতে জানিয়েছে, ‘‘আমরা নির্দোষ। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছেন। আমরা ছাড়া তাঁদের ভরণপোষণের আর কেউ নেই। সেই কারণে আমাদের সাজার মেয়াদ কম করা হোক।’’
আলিপুর আদালতের সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ ও প্রশান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, ‘‘বিচারক খুনের ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, অস্ত্র আইনের ধারায় চার বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাটের ধারায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন।’’ অন্য সরকারি আইনজীবী সুদীপা শূর জানান, বিচারকের রায় অনুযায়ী প্রথমে পাঁচ বছর অস্ত্র আইনের ধারায় সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে অভিযুক্তদের। সেই সাজার মেয়াদ শেষে খুনের ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড শুরু হবে। এবং সেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চলবে আমৃত্যু।